বর্তমান সময়ে প্রায়ই দেখা যায় যে অনেকেরই ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে গেছে। অনেকেই এই হ্যাকিং সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগে।
তবে আপনার হয়তো মনের মধ্যে এখন একটি প্রশ্ন জাগতে পারে ভাই কিভাবে ফেসবুক হ্যাকাররা ফেসবুক হ্যাক করে? ফেসবুক হ্যাক করার ক্ষেত্রে তারা কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করে?
যদিও এ সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া সম্ভব নয় তবে অনুমান করা যায় যে ফেসবুক হ্যাকার পদ্ধতি অবলম্বন করে ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক করে।
ফেসবুক হ্যাকারদের ব্যবহৃত কি সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে ফেসবুক হ্যাক করে তারা? আপনি কি সম্পর্কে জানতে চান? জানার জন্যই তো এই পোস্টে পদার্পণ করেছেন।
যাই হোক আজকের এই পোষ্ট দিতে আমি আলোচনা করব ফেসবুকে তাদের বহুল ব্যবহৃত হ্যাকিং পদ্ধতি, যার মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নেয় আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
লিংক দিয়ে হ্যাক
লিংক দিয়ে হ্যাক এর সাথে আমরা প্রায় সকলেই পরিচিত, এই লিংকগুলো সম্পর্কে আমরা এতটা সচেতন হয়ে গেছি যে, এখন সাধারন কোন লিংক ফেসবুকে সেন্ড করলেও আমরা এটাকে ফিশিং লিংক বলে চালিয়ে দিতে ভুল করিনা।
কি সেই ফিশিং লিংক? এগুলো কি ফেসবুক আইডি হ্যাক করার মেশিন? এগুলো কি চুম্বকের মতো আকর্ষণ করতে পারে আপনার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড এবং ইমেইল এড্রেস?
আমাদের প্রায়ই ধারণা যে এগুলো চুম্বকের মতোই হয় অনেকটা, এরকমটা ধারণা না থাকলে আমরা কিভাবে এই সমস্ত ফিশিং লিংকে ক্লিক করলেই আমাদের ফেসবুক আইডি চলে যাবে এই ভাবনা ভাবতে পারি?
এগুলো আমার মোটেও বুঝে আসেনা, তবে যাই হোক এতে হ্যাকারদের বহুল ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি যা পূর্বে ব্যবহৃত হতো। তবে এখন গুটিকয়েক শেখার পদ্ধতি অবলম্বন করে ভিন্ন রূপে।
এগুলো আপনার বুঝার সাধ্যের বাইরে হতে পারে, কারণ এখন সবাই যদি লিঙ্ক এ ক্লিক না করে তাহলে এটি প্রায় অকার্যকর একটি পদ্ধতি। কিন্তু লিংক থেকে ভালোভাবে কাস্টমাইজ করে দিলে যে কেউ এতে ক্লিক করবে।
এরকম অনেক সন্দেহজনক লিংক রয়েছে যে লিংক গুলোতে ক্লিক করলে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্রাশ হয়ে যাবে, এতে আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল পাসওয়ার্ড তাদের কাছে চলে যাবে।
তাই যে কোনো সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করার আগে ঐ লিঙ্কটির এড্রেসটি ভালোভাবে দেখে নিবেন যেটি আসলে সিকিউর কিনা। এক্ষেত্রে আপনি দেখতে পারেন- http অথবা https এই দুইটা সহকারে লিঙ্ক তৈরি হয়েছে কিনা।
যদি এই সমস্ত ফরমেটে লিংক তৈরি হয়ে থাকে তাহলে আপনি এটিতে নির্দ্বিধায় ক্লিক করতে পারেন। অন্যথায় আপনি যদি আতঙ্কগ্রস্ত হন তাহলে এতে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
তবে হ্যাঁ ফিশিং সাইট লিঙ্ক এগুলো বহুল ব্যবহৃত এবং পূর্বের কার্যকরী একটি পদ্ধতি, এগুলো এখনো ব্যবহৃত হয় তবে ভিন্ন ভাবে। যেমন- নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন, ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা মূলক উক্তি দিয়ে।
ব্রুস ফোর্স অ্যাটাক-
এটি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় এবং একটি কার্যকরী হ্যাকিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে হ্যাকারদের কয়েক মিলিয়ন পাসওয়ার্ড এর প্রয়োজন হয়।
এই পাসওয়ার্ডগুলো হয় কমন টাইপের কয়েকটি পাসওয়ার্ড যেগুলো ফেসবুক একাউন্টে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, এবং এই পাসওয়ার্ডগুলো ট্র্যাক করে আপনার ফেসবুক আইডিটা হ্যাক করে।
এক্ষেত্রে তারা যখন ফেসবুক আইডিতে ব্রুষ ফোর্স অ্যাটাক দেয় তখন তারা এই পাসওয়ার্ড গুলোর মধ্যে থেকে যদি একটি পাসওয়ার্ড আপনার সাথে মিলে যায় তাহলে তা বুঝতে সক্ষম হয়।
এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, তবে কার্যকরী বটে। এই পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য হ্যাকারেরা বেশকিছু সময় হাতে নেয় অথবা তাদের পিসিতে এটি চালু করে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হতে পারে।
আর এই পদ্ধতি থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য আপনি চাইলে কয়টি স্টেপ ফলো করতে পারেন-
- আনকমন টাইপের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন,
- পাসওয়ার্ডে বিভিন্ন স্পেশাল চারাক্টার্স #@##$()& এগুলো ব্যবহার করুন
- ফেসবুক আইডিতে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন ওপেন করুন
উপরুক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করলে কখনোই আপনার ফেসবুক একাউন্ট ব্রুস ফোর্স অ্যাটাক নামক ফেসবুক হ্যাক সংক্রান্ত জটিলতার মধ্যে পড়বে না।
ফ্রি এবং পেইড টুলস অথবা ফেসবুক হ্যাকিং সাইট
এগুলো সাধারণত প্রফেশনাল টাইপের হ্যাকাররা তৈরি করে, এই tools-গুলোর কার্যপদ্ধতি দেখলে আপনি রীতিমত থমকে দাঁড়াবে। এগুলো অনেক কার্যকরী এবং প্রায় শতভাগ কাজ করে।
তবে ফ্রী টুলস গুলোর থেকে পেইড টুলসগুলো অথবা ফেসবুক হ্যাকিং সাইট সবচেয়ে বেশি কার্যকরী, টুলস গুলোর কার্যপদ্ধতি অনেকটা এরকম।
যখনই এই টুলস গুলোর মধ্যে আপনার ফেসবুক আইডি স্ক্যান করা হয় তখনই আপনার ফেসবুক আইডিতে থাকা সমস্ত ডকুমেন্টগুলো তারা পেয়ে যায়।
যতটা না সহজভাবে আমি এটা বর্ণনা করছি এটা অনেকের পক্ষে করা প্রায় ঠিক ততটাই দুঃসাধ্য, এক্ষেত্রে হ্যাকারদের সঠিক টুলস গুলো কে নির্বাচন করতে হয়।
যা অনেক কষ্টকর এবং সময় সাপেক্ষ, ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে হলে তো ভাই হ্যাকারদের এতটুকু কষ্ট করতেই হয়। কারণ বর্তমানে জুকার যে রকমের টাইট দিছে ফেসবুক সিকিউরিটিতে।
অ্যাপস এবং গেমস
ওয়েব এরকম অনেক এপস এবং গেমস আছে যেগুলো ব্যাবহার করা আপনার ফেসবুক আইডির পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে যেতে পারে।
এই অ্যাপস গুলো কিরকম ভাবে কাজ করে জানেন? একটি বিষয় আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন অ্যাপস গুলো তে ঢোকার পরে তারা আপনার কাছে আপনার বিভিন্ন বিষয়ে এক্সেস নিতে চায়।
এক্ষেত্রে অ্যাপসগুলো তে প্রবেশ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই তাদেরকে পুরোটা এক্সেস দিয়ে তারপরে এতে প্রবেশ করতে হয়।
আচ্ছা আপনি যখন তাদেরকে আপনার ফাইল স্টোরেজ ইত্যাদি সম্পর্কে এক্সেস দিয়ে দেন তখন তারা কি আপনার ফোনটি কন্ট্রোল করতে পারে না?
অবশ্যই পারে, আর যখন তারা আপনার ডিভাইস কন্ট্রোল করতে পারবে তখন তাদের পক্ষে আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নেওয়া কয়েক মিনিটের ব্যাপার মাত্র।
কি-লগার ফাইল
এটা সাধারণত এরকম হয় যখন আপনি কোন ওয়েবসাইট থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করেন। এখানে রাখি করে জানেন এই ফাইল গুলোর মধ্যে ভাইরাস ঢুকিয়ে দেয়।
তাছাড়া যখনই আপনি এগুলো ডাউনলোড করার পর আপনার কম্পিউটার অথবা ডিভাইস অপেন করবেন তখন তারা আপনার ফোনের সমস্ত এক্সেস নিয়ে নিতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে কোন কিছু ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে ট্রাস্টেড কোন সাইট থেকে ডাউনলোড করতে হবে। তানাহলে এর ভোগান্তি হিসেবে আপনাকে ফেসবুক হ্যাক সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে।
আর উপরে বর্নিত কয়েকটি উপায় এর মাধ্যমে যে ফেসবুক আইডি হ্যাক হতে পারে তা কিন্তু নয়। আরো অনেক উপায় রয়েছে যা হ্যাকাররা ব্যবহার করে।
তবে উপরে উল্লেখিত উপায়গুলো সবচেয়ে কার্যকরী এবং বহুল ব্যবহৃত, তাই ফেসবুক আইডি হ্যাক সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগে সমস্ত বিষয় গুলোর মধ্যে নজর দিবেন।