বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির পদদলিতে মুখরিত পুরো বিশ্ব। একই রকম ভাবে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মুখরিত করতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে।
যেহেতু বর্তমান বিশ্ব পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর যার কারণে আপনার ব্যবসাকে ও প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তুলতে হবে। আর এটা করে তোলার প্রধান মন্ত্র হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে আলোচনা করা হবে ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন এই সম্পর্কে।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
মূলত আপনার যদি একটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে থাকে এবং আপনি ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্টগুলো কে অনলাইন কে কাজে লাগিয়ে বিক্রি করেন; তাহলে সেটাকে ডিজিটাল মার্কেটিং করা হবে।
আজ থেকে ১০ বছর আগে দেখা গিয়েছিল যে যে বা যারা মার্কেটিং এর কাজে সম্পৃক্ত রয়েছে, তারা তাদের পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিংবা যেকোন প্রচারণার মাধ্যমে বিক্রি করছে।
আপনি যদি বাড়ি গিয়ে কোনো একটি প্রোডাক্ট বিক্রি করেন তাহলে এই প্রোডাক্ট বিক্রির হারের চেয়েও কষ্টের হার অনেক বেশি হয়ে যাবে। এছাড়াও এক্ষেত্রে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়।
তবে ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজটি একদম সহজ করে দিয়েছে। যার ফলে আপনি ঘরে বসেই আপনার প্রোডাক্ট একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ঘন্টার পর ঘন্টা, বছরের-পর-বছর প্রমোট করতে পারবেন।
আর আপনি যদি স্বাচ্ছন্দে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান তাহলে এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে যেগুলো দিকে আপনার মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
অর্থাৎ এই মার্কেটিংয়ের এই সমস্ত ক্যাটাগরিগুলো আপনি যদি পরিপূর্ণভাবে ধারণা আনতে পারেন। তাহলে আপনার মার্কেটিং অনেক বেশি এগিয়ে যাবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করতে চান তাহলে এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতায় অনেকগুলো ক্যাটাগরি বা প্রকারভেদ পড়ে যাবে।
অর্থাৎ মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে এই সমস্ত লিস্ট গুলো আপনার বুকমার্কে সেভ করে রাখতে হবে, এবং step-by-step এ সমস্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে পরিপূর্ণ জানতে হবে।
যখনই আপনি মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নিতে পারবেন, তখন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ সার্থক হবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে না জানলেই নয়, সেগুলো নিচে মেনশন করা হলো।
- কনটেন্ট মার্কেটিং।
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও।
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং।
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
- এফিলিয়েট মার্কেটিং।
- ইমেইল মার্কেটিং।
- রেডিও এডভার্টাইজিং।
- টেলিভিশন এডভার্টাইজিং।
মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতাধীন উপরে উল্লেখিত ৮টি বিষয়ে সর্বোপরি পড়ে। তাহলে আর দেরি না করে এখনি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
কনটেন্ট মার্কেটিং
ইন্টারনেটের জগতে সর্বোপরি একটি কথা শুনা যায় আর সেটা হল কনটেন্ট ইস কিং। অর্থাৎ যার সবচেয়ে ভালো কনটেন্ট রয়েছে সে বর্তমানে ইন্টারনেটের জগতে রাজা।
আপনি এই সম্পর্কে কল্পনাও করতে পারবেন না একটা মাত্র কনটেন্ট আপনার বিজনেস কে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। যার কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং এ সর্বোপরি যে বিষয়টিকে মূল্যায়ন করে সেটি হল কনটেন্ট মার্কেটিং।
অর্থাৎ আপনি যখন ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চাইবেন তখন এরকম অনেক তথ্যবহুল কনটেন্ট আপডেট করতে হবে। যার ফলে যেকোনো ভিউয়ার্স আপনার কনটেন্ট ভালোভাবে পড়বে এবং প্রোডাক্ট ক্রয় করতে ইচ্ছা পোষণ করবে।
একটি ভাল কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে অনেকগুলো টিপস এবং ট্রিকস ফলো করতে হয়। যার মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো।
- আকর্ষণীয় টাইটেল।
- তুমি এবং আমি এই কনভারসেশন এর কথা বলা।
- মেটা দেস্ক্রিপশন।
- কনটেন্টের মধ্যে ফ্রী কিছু প্রদান করা।
- যে প্রোডাক্ট নিয়ে আলোচনা করবেন সেই সম্পর্কে তথ্য গুলো আলোচনা।
- কনটেন্ট এর মধ্যে ইমেজ যুক্ত করা।
- ইনফোগ্রাফিক্স যুক্ত করা।
- প্রয়োজন হলে পডকাস্ট যুক্ত করা।
- সর্বোপরি ভিডিও যোগ করা। ইত্যাদি
মূলত যখনই আপনি একটি কনটেন্ট তৈরি করতে চাইবেন তখন যদি উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো কনটেন্ট এর সাথে সম্পৃক্ত করেন। তাহলে একটি কনটেন্ট পুরোপুরি আকর্ষণীয় হয়।
তাই যখন একটি তথ্যবহুল কনটেন্ট লেখার ইচ্ছা পোষণ করবেন তখন উপরে উল্লেখিত যে বিষয় গুলো রয়েছে সেগুলো কনটেন্ট এর মধ্যে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবেন।
তাছাড়া সব সময় কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে যে টাইটেল দিবেন সেই টাইটেলটি আকর্ষণীয় এবং মনমুগ্ধকর হতে হবে যাতে যে কেউ আপনার টাইটেল এ ক্লিক করতে বাধ্য হয়।
কারন যখনই আপনার কনটেন্ট রিলেটেড একটি কিওয়ার্ড সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ করা হয়, তখন যে কোন ব্যক্তি শুধুমাত্র টাইটেল এবং মেটা ডেসক্রিপশন দেখতে পারে।
এবার আপনার টাইটেল যদি খুব বেশি পরিমাণে আকর্ষণীয় হয়ে থাকে তাহলে যে কেউ টাইটেলের উপরে ক্লিক করবে আর টাইটেলের উপরে ক্লিক করার পর এই আপনার কনটেন্ট পড়তে পারবে।
এছাড়াও একটি ভালো এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট রাইটিং করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়গুলি সর্বোপরি জেনে নেয়া দরকার সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিতে চাইলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখে নিন।
আরো পড়ুন: কনটেন্ট রাইটিং | কিভাবে সফল আর্টিকেল লিখবেন?
উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি সহজেই কনটেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারবেন এবং একটি তথ্যবহুল কনটেন্ট লিখতে পারবেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
যেহেতু এটা ডিজিটাল মার্কেটিং এন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূলমন্ত্র হলো ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে আপনার পণ্যকে প্রচার করা।
এবার ইন্টারনেট বলতে আমরা সাধারণত সার্চ ইঞ্জিনকে বিবেচনা করে থাকি। আর বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হলো গুগল। মূলত গুগলের মাধ্যমে আপনার সাইটের ট্রাফিক আনতে হবে।
এখন আপনি যদি গুগলে আপনার কনটেন্টকে রেংক করাতে চান তাহলে গুগলের যে সমস্ত রেংকিং ফ্যাক্টর রয়েছে সেগুলো কে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও বলা হয়।
অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে যখনই আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তখন একজন এসইও এক্সপার্ট এর সহযোগিতায় আপনার ওয়েবসাইটকে পুরোপুরি এসইও ফ্রেন্ডলি করে তুলতে পারেন।
এখানে মূল মন্ত্র হলো আপনার ওয়েবসাইটকে এসইও ফ্রেন্ডলি করে তুললে আপনার কাজটি সম্পাদন হয়ে যাবে না। এক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশকৃত কনটেন্টগুলোকেও এসইও ফ্রেন্ডলি করে তুলতে হবে।
এবার আপনি যদি এসব সম্পর্কে খুব বেশি পরিমাণে ধারণা রাখেন, তাহলে এই কাজগুলো নিজে থেকে করতে পারেন অথবা একজন এসইও এক্সপার্ট হায়ার করে কাজগুলো সম্পাদন করতে পারেন।
মনে রাখবেন, আপনার বিজনেস রিলেটেড কোন একটি কনটেন্ট যদি গুগলের প্রথম পেইজে প্রথম পজিশনে রেংক করে, তাহলে বিজনেস অনেকদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
এর সাথে এটাও মনে রাখবেন, গুগলের প্রথম পেইজের প্রথম পজিশনে আসা চার্ট এখানে কোন কথা নয় সেজন্য আপনাকে অনেক খাটনি খাটতে হবে।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একটি ব্যাপক প্রচলিত মার্কেটিং। ব্যবস্থা এটিকে পেইড মার্কেটিং হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়।
মূলত আপনি যখন গুগলে কোন একটি কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করেন তখন প্রথম পজিশনে কয়েকটি রেজাল্ট দেখা যায়। যেগুলো পাশে ad লেখা মেনশন করা থাকে।
আর উপরে স্ক্রিনশটে দেখানো ad লেখা যে কনটেন্ট গুলো রয়েছে সেগুলো মূলত সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে করা। আর এটা যদি আপনি গুগল এর মাধ্যমে করেন তাহলে অনেক বেশি ব্যয়বহুল হবে।
তবে সফলভাবে আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটে অনেক বেশি ট্রাফিক ড্রাইভ করা সম্ভব হবে।
এখানে আরেকটি বিষয় মেনশন করা দরকার আর সেটা হল ব্যবসা শুরুর দিকে আপনাকে ইনভেস্টমেন্ট অবশ্যই করতে হবে।
ইনভেস্টমেন্ট করতে আপনি যদি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব করেন, তাহলে ব্যবসা কে দাঁড় করাতে পারবেন না।
সেজন্য গুগলের পেইড এডস ব্যবহার করতে পারেন। যাতে করে আপনার কীওয়ার্ড রিলেটেড কনটেন্ট সহজে গুগলের প্রথম পজিশনে রেঙ্ক আদায় করে নিতে পারে।
মূলত সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো ফলোআপ করা হয় সেগুলো হলোঃ
- প্রথম একটি কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়, আপনার ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট রিলেটেড।
- তারপরে আপনি যে এড তৈরি করেছেন সেই এর কোন কোন কান্ট্রিতে দেখাবে সেই রিলেটেড একটি জিওগ্রাফিক লোকেশন তৈরি করতে হবে।
- একটা টেক্সট বেইড এড তৈরি করতে হবে, যা গুগলের প্রথম পজিশনে রেঙ্ক করবে।
- সবশেষে একটি অর্থের পরিমাণ মেনশন করতে হবে। অর্থাৎ কেউ যখন আপনার এই অ্যাডে ক্লিক করবে তখন গুগল কত টাকা পাবে সেটার বিড প্লেসমেন্ট মেনশন করতে হবে।
মূলত সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো সর্বাপেক্ষা করা হয়। তবে এক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও দিকে নজর করা অবশ্য পালনীয় বিষয়।
সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং
আপনি হয়তো ইতিমধ্যে এই সম্পর্কে অবগত আছেন যে বর্তমান সময়ে যে কেউ সোসিয়াল গণমাধ্যমের দিকে ঝুঁকে পড়া টা খুব বেশী আশ্চর্যের কথা নয়।
কারণ বর্তমান সময়ে আমাদের পুরো অবসর সময়টা জুড়ে রয়েছে সোসিয়াল গণমাধ্যমে। যার কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর দিকে নজর দেয়া বুদ্ধিমানের এর কাজ।
মূলত আপনি যদি সোসিয়াল গণমাধ্যমে পুরোপুরি অ্যাক্টিভিটি অর্জন করে নিতে পারেন, তাহলে আপনার বিজনেস অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার মাধ্যমে জনপ্রিয় সোশাল গণমাধ্যমে আপনার বিজনেস ইন্ডাস্ট্রিজের প্রোডাক্ট গুলো প্রচার করতে পারেন।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোসিয়াল কোন মাধ্যম হিসেবে যেগুলোকে বিবেচনা করা হয় সেগুলো হলো।
সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত অফিসিয়াল গনমাধ্যমের দিকে নজর করতে হবে। এ সমস্ত গণমাধ্যমে আপনার বিজনেসের অ্যাক্টিভিটি বাড়াতে হবে।
ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি যদি সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং করেন, তাহলে ফেইসবুক এ আপনার বিজনেস ইন্ডাস্ট্রিজ রিলেটেড একটি পেইজ কিংবা গ্রুপ তৈরি করুন।
এবার পেইজ তৈরি করা সম্পন্ন করে নিলে টাকা খরচ করার মাধ্যমে পেইজ এর প্রোডাক্ট গুলো প্রমোট কিংবা বুস্ট করে ফেলুন এবং এটি হাজার বা লাখো মানুষের কাছে পৌঁছে দিন।
মূলত যেকোনো সোসিয়াল গণমাধ্যমের সহযোগিতায় আপনি যদি সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং করতে চান তা হলে প্রত্যেকটি গণমাধ্যমেই আপনাকে অ্যাক্টিভিটি বাড়াতে হবে।
সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং এর সফলতা পাওয়ার কয়েকটি উপায়ঃ
- অরিজিনাল প্রডাক্ট প্রমোট করুন।
- ভিজিটরের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করুন।
- পেজ কিংবা গ্রুপের রেসপন্স রেট বৃদ্ধি করুন।
- ভুয়া প্রডাক্ট প্রমোশন করে লোকদেরকে বিভ্রান্ত করবেন না।
- ক্যাশঅন ডেলিভারি সেবা চালু করুন।
- কম সময়ে ডেলিভারি দেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করুন।
- ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন প্রচার করুন।
- প্রডাক্ট রিলেটেড ভালো মানের ইনফোগ্রাফিক্স তৈরি করুন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সফলতা পাওয়ার ক্ষেত্রে উপরে যে বিষয়গুলো মেনশন করা হলে সেগুলোর দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।
তবে এই বিষয়গুলো ছাড়াও আরো অনেক বিষয় রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আপনার জানা প্রয়োজন।
ডিজিটাল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অনেক অবদান রাখে। যার কারণে সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে পরিপূর্ণ তথ্য জেনে নিন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় সর্বোপরি লক্ষণীয় আর মধ্যে একটি হলো পাবলিশার আরেকটি হলো অ্যাডভারটাইজার।
এখানে যেহেতু আপনি আপনার বিজনেস ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রোডাক্ট প্রমোট করবেন সে জন্য আপনি অ্যাডভারটাইজার এবং যে আপনার প্রোডাক্ট গুলো প্রমোট করবে সে হলো পাবলিশার্স।
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনার বিজনেস রিলেটেড প্রোডাক্টগুলো পুরো ইন্টারনেটজুড়ে থাকা বিভিন্ন বড় বড় ওয়েবসাইট কমিশনের পরিবর্তে প্রচার করতে বাধ্য হবে।
এক্ষেত্রে ওই সমস্ত ওয়েবসাইটে থাকা ভ্যালুয়েবল ভিজিটর আপনার প্রডাক্ট দেখতে পারবে এবং আপনার ওয়েবসাইটের কনভারসেশন রেট বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
সেজন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে এফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাডভারটাইজার হিসেবে ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করুন। আপনার প্রোডাক্ট গুলোর এফিলিয়েট লিঙ্ক তৈরি করুন।
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে এডভারটাইজার হিসেবে ব্যবসাকে বহুদূর এগিয়ে নেয়ার জন্য সর্বপ্রথম চেষ্টা করবেন একটি প্রোডাক্ট প্রচারের ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে কমিশন রেট বৃদ্ধি করার।
এতে করে যে কেউ আপনার ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট তাদের ওয়েবসাইটে প্রচার করতে আরো বেশি মনোযোগী হবে।
আর ঐ সমস্ত ওয়েবসাইটের অডিয়েন্সের কাছে যদি একবার আপনার ওয়েবসাইট পরিচিত হয়ে যায় তাহলে কনভার্সেশন রেট বৃদ্ধি পাবে।
আর আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর কনভারসেশন রেট যদি একবার বৃদ্ধি পেয়ে যায়, তাহলে আপনার মার্কেটিং এর সফলতা ঠেকাবে কে?
ইমেইল মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইমেইল মার্কেটিং। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে যারা প্রবেশ করবে তাদের ইমেইল কালেক্ট করা।
ইমেইল মার্কেটিংয়ে আপনি যদি সফল হন তাহলে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রোডাক্ট প্রচার করা আরো বেশী সহজতর হয়ে উঠবে।
কারণ আপনি যখন যে কারো ইমেইল কানেক্ট করবেন তখন পরবর্তী সময়ে ও ইমেইলের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড নোটিফিকেশন সেন্ড করতে পারবেন।
আপনার ওয়েবসাইটে যদি নতুন কোন প্রোডাক্ট এর আবির্ভাব ঘটে, তাহলে একটি ই-মেইল এর মাধ্যমে সমস্ত অডিয়েন্সের কাছে আপনি আপনার প্রোডাক্টের নটিফিকেশনে পৌছে দিতে পারবেন।
আর সেজন্যই আপনাকে ইমেইল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে নজর দিতে হবে; মূলত ইমেইল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে একেকটা ফানেল তৈরি করতে পারেন।
বিষয়টা এরকম যে আপনি যাদের ইমেইল কালেক্ট করতে চাইবেন তাদেরকে ফ্রিতে কোন কিছু একটা দিবেন এবং তারপরে ইমেইল কালেক্ট করবেন।
যেমন ধরুন; আপনার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ পিডিএফ ফাইল ফরম্যাট রয়েছে। যে ফাইল ফরম্যাট আপনি চাইলে টাকা দিয়ে বিক্রি করতে পারেন এবং ফ্রিতে যে কাউকে দিতে পারেন।
এবার আপনি যদি আপনার অডিয়েন্সের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যে ফ্রিতে আপনি তাদেরকে একটা প্রোডাক্ট দিয়ে দিচ্ছেন, তাহলে যে কেউ এটি নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করবে।
এবার যখনই আপনি ওই পিডিএফ ফাইলটি যে কাউকে দিতে চাইবেন তখন তাদের ইমেইল এড্রেস দেয়ার কথা বলুন। যাতে করে পরবর্তী সময়ে আপনি তাদেরকে এই মেইল এড্রেসে পিডিএফ ফাইল পেরন করতে পারেন।
যেহেতু সবারই ইচ্ছা আপনার পিডিএফ ফাইল ফরম্যাট নিজের কাছে নিয়ে নেওয়ার। তাই সবাই ইমেইল এড্রেস দিতে বাধ্য থাকবে, আর আপনি এই ইমেইল এড্রেস যেকোনো একটি টুলস এর মাধ্যমে কালেক্ট করে নিবেন।
আর ইমেইল এড্রেস কালেক্ট করে নেয়ার পরে পরবর্তী সময়ে আপনার ওয়েবসাইটে যদি কোন প্রোডাক্ট প্রচার করেন, তাহলে সেটি নোটিফিকেশন সমস্ত ব্যক্তিবর্গকে দিতে পারবেন।
যে কাজগুলো কখনোই করবেনা
- অনেকে আছেন ইমেইল কালেক্ট করে নেয়ার পরে অযাচিত নোটিফিকেশন সেন্ড করে থাকেন। আর এটা যে কারো জন্য ওভার ওয়ার্মিং হয়ে যেতে পারে।
- আর যখন আপনার অযাচিত স্প্যাম ইমেইল এর কারণে যে কেউ অসন্তুষ্ট হবে তখন সে নিঃসন্দেহে ইমেইল লিস্ট থেকে আন-সাবস্ক্রাইব করবে। তাই ভ্যালুয়েবল ইমেইল সেন্ড করার চেষ্টা করুন।
রেডিও এডভার্টাইজিং
বর্তমান সময়ে রেডিও-এর খুব বেশি প্রচলন না-হলেও আপনি চাইলে এটি করার মাধ্যমে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং সার্থক করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনার টার্গেট কান্ট্রিতে থাকা যেকোনো রেডিও ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেটেড প্রোডাক্ট প্রচার করতে পারেন।
টেলিভিশন এডভার্টাইজিং
ইন্টারনেটের যতই প্রকোপ বৃদ্ধি পাক না কেন, টেলিভিশন দেখার যে প্রকোপ ছিলো সেটি পূর্বের ন্যায় বর্তমানেও লক্ষনীয়। যার কারণে টেলিভিশনের দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।
এবার আপনি যদি জনপ্রিয় কয়েকটি টেলিভিশন এডভার্টাইজিং করতে চান, তাহলে খুব বেশি পরিমাণে টাকার প্রয়োজন হবে, তবে করতে পারলে মার্কেটিং সার্থক হবে।
আপনি এই সম্পর্কে কল্পনাও করতে পারবেন না একটি ভালো টার্গেটেড টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করলে আপনার বিজনেস কতদূর এগিয়ে যেতে পারে।
যার কারণে টেলিভিশন এডভার্টাইজিং এর দিকে নজর দিন এবং এভাবে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং প্রচার করুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফল হবেন যেভাবে
আপনি যদি একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটের হিসেবে পরিচিতি অর্জন করতে চান, তাহলে যে সমস্ত বিষয়গুলো আপনার মধ্যে সর্বোপরি থাকা প্রয়োজন সেগুলো হলো।
- কঠোর অধ্যাবসায়।
- ধৈর্য।
- ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিটি বৃদ্ধি করা।
- ইনভেস্ট করার প্রবণতা বৃদ্ধি।
- অডিয়েন্সের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ। কাস্টমারকে নিচের ফ্যামিলি মেম্বার মনে করা। কমিসন রেট বৃদ্ধি করা।
- জানার প্রবল আগ্রহ ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর সফলতা পাওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে মাত্র। সফলতা পেতে হলে আপনাকে অনেক খাটনি খাটতে হবে এবং রিসার্চের মাধ্যমে সফলতা আদায় করে নিতে হবে।
কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফল হওয়া মানেই যেহেতু আপনার বিজনেস সফলতার মঞ্চে উঠে যাওয়া, সেজন্য সফলতা পেতে হলে দাতে দাত চেপে কষ্ট করতেই হবে। স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন