আপনি আসলে কি ধরনের মানুষ বা কেউ আপনার কাছ থেকে কতটুকু ইম্প্রেশন আদায় করে নিতে পারবে এবং আপনার প্রিয় মানুষ হতে পারবে, এটা একান্তই নির্ভর করে আপনার ব্যবহারের উপরে।
ব্যক্তিত্ব বলতে আসলে একদম সোজা এবং স্পষ্ট অর্থ যে ব্যাপারটি বুঝা যায় সেটা হল আপনার চরিত্রের সমষ্টি।
আর এই কঠোর এবং প্রতিনিয়ত অনিয়মের বেড়াজালে আটকে সমাজে আপনি তখনই টিকে থাকতে পারবেন, যখন আপনি একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে সক্ষম হবেন।
সমাজের নিয়ম কানুনের বেড়াজালে চলার পথে আপনাকে নানান রকমের মানুষের সাথে পরিচয় হতে পারে। আর আপনাকে এই মানুষগুলোকে অবশ্যই এড়িয়ে চললে হবে না।
এই মানুষগুলোর সাথে আপনাকে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করতে হবে, যাতে করে আপনি তার মন জয় করে নিতে পারেন। এটা একটা লাইফ হ্যাকস বললেও ভুল হবে না।
কারণ চলার পথে আপনি যখন পূর্বের মতই অনেকগুলো মানুষের মন জয় করে নিতে পারবেন, তখন এই সমাজে আপনার অন্যরকম স্থান প্রতিষ্ঠিত হবে।
সমাজের মানুষগুলো আপনাকে বসিয়ে রাখবে শ্রদ্ধার চরম সিংহাসনে। আর এগুলো কখন হবে জানেন কি? অবশ্যই যখন আপনি একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবেন?
এবার আপনার মনের মধ্যে একটু হলেও কি ব্যক্তিত্ববান মানুষ হওয়ার ইচ্ছা জেগেছে? আপনি কি ব্যক্তিত্ববান মানুষ হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চান?
তাহলে আজকের দেয়া এই পুরোপুরি গাইডলাইন দেখে নিতে পারেন। যাতে করে আপনিও হয়ে উঠবেন একজন সফল ব্যক্তিত্ববান মানুষ।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
সব সময় পজিটিভলি ভাবুন
আপনি যদি এরকম কোন সিচুয়েশনে মধ্যে পড়েন , যেখানে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয় এটা করত হবে নয়ত মরতে হবে।
তাহলে এই অবস্থার মধ্যে থাকলে আপনি কি করবেন? অবশ্যই আপনি ভয়ে বিভ্রান্ত হয়ে বলবেন- যেখানে হারা সম্ভাবনাটাই বেশি, সেখানে এই কাজটি জীবন বাজি রেখে করে কি লাভ হবে?
আপনার মধ্যেও যদি এরকম কোন ইচ্ছা তখনকার সময় লাগে তাহলে ভেবে নিবেন আপনি কখনোই একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হয়ে উঠতে পারবেন না।
কারণ সমস্ত ব্যক্তিত্ববান মানুষেরা এই সময় গুলোকে নিজের সফল হওয়ার একমাত্র চাবিকাঠি হিসেবে বেছে নিয়েছিল।
তাছাড়া যেকোন সময় ইতিবাচক মনোভাব পোষন করেছিলো, আর আপনিও তখনই একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবেন যখন আপনি আপনার মনের মধ্যে সবসময় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করবেন।
এরকম শুধু সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় নয়, জীবনে চলার পথে আপনি ঠিক একই রকম অনেক অবস্থার সম্মুখীন হতে পারেন। এ সময় গুলোতে আপনার হাল ছেড়ে দেয়া কখনোই ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করবেনা।
অন্যদের কথার গুরুত্বারোপ করুন
এরকম অনেক ব্যক্তি আছে তাদের মনের মধ্যে এই কথাটি পোষণ করে যে- সবার বক্তব্য শোনার কি দরকার? আমি যতটা পারি কিংবা বুঝি ততটা ও কি বুঝে?
একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ কখনো এটা করবে না। কারণ আপনি যদি ব্যক্তিত্ববান মানুষ হতে চাইবে পরক্ষণেই আপনাকে অবশ্যই একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে।
আর আপনি যখন একজন ভালো শ্রোতা হয়ে গড়ে উঠবে তখনই দেখবেন যে আপনি এরকম অনেক কিছু শিখে গেছেন, যা আপনি আগে কখনোই জানতেন না।
আর তাই আপনি চারিদিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন ব্যক্তিত্ববান মানুষেরা সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় কিংবা সফলতার দিক থেকে অন্যদের তুলনায় বহুগুণ এগিয়ে।
এজন্য আপনি যখনই ব্যক্তিত্ববান হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করবেন তখনই আপনাকে অন্যদের সমস্ত কথা কে প্রাধান্য দিতে হবে। এবং এরপর যে কথাগুলোকে আপনার ভাল মনে হয় সে কথাগুলোকে মান্য করার চেষ্টা করবেন।
ব্যক্তিত্ববান মানুষ হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই সমস্ত বিষয় একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে করতে হবে।
হয়ে উঠুন আত্নবিশ্বাসী
কখনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এরকম টা কি মনে হয়-আমি কি পারব? এরকম চিন্তা ভাবনা যদি আপনার মনের মধ্যে একটু থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আত্মবিশ্বাসী মানুষের অন্তর্ভুক্ত নন।
কারণ ব্যক্তিত্ববান মানুষেরা অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী দের মধ্যে অন্যতম হয়ে থাকে। যখনই আপনি কোন সিদ্ধান্ত নিবেন এই সিদ্ধান্তগুলো সত্যতা যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে আপনি আত্মবিশ্বাসী দের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
বিষয়টিকে একেবারে কি আর করা যাক পড়াশুনার ব্যাপারে মাধ্যমে।তাহলে আপনি হয়তো এটা নিয়ে আরেকটু বেশি ভাবার চেষ্টা করবেন।
উদাহরণস্বরূপ আপনি একজন ছাত্র, পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন আপনার হয়তো কমন এসেছে। কিন্তু আপনি আত্মবিশ্বাসী নন।
ফলে আপনি আপনার নিজের জানা উত্তরটি না লিখে অন্যদের খাতা দেখে লেখা শুরু করলেন, এবং বাড়িতে এসে দেখলেন সবগুলোই ভুল। আর আপনি যেটা জানতেন সেটাই সঠিক ছিল।
এবার আপনার অবস্থাটা ভাবুন। আপনি ওই সময় গুলোতে কতটা খারাপ জীবন যাপন করবেন, যে সময় আপনার কাছে বিন্দুমাত্র আত্মবিশ্বাস থাকবে না।
আর যখনই আপনি খারাপ জীবন যাপন করবেন তখন এটা ভেবে নিবেন যে, আপনি ব্যক্তিত্ববান মানুষের অন্তর্ভুক্ত নন।( বিষয়টা তীষ্নভাবে ভাবুন)
সময়ের যথাযথ মুল্যায়ন
একটি প্রবাদ বাক্য আমরা প্রায় সকলেই জানি- সময় এবং স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না” আপনি যখন ব্যক্তিত্ববান মানুষ একজন সফল মানুষ হতে চাইবেন, তখনই আপনাকে সময়ের দিকে বেশি নজর রাখতে হবে।
কারণ আপনি হয়তো এটা জানেন যে সময়টা চলে যাবে সেটা আর কখনো হাজার-লক্ষ চেষ্টার পরেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
আপনি যখন এই সময়টিতে আজকের এই পোস্টটি পড়ছেন, তখন হয়তো আপনার জীবন থেকে আরও কিছু সময় চলে যাচ্ছে। এই সময় গুলোকে আর কি ফিরে পাবেন?
তাই সবারই উচিত সময়কে যথাযথ মূল্যায়ন করে সৎ ভাবে একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষের পথ মতই সর্বদা ভালো পথে চলা।
আর ব্যক্তিত্ববান মানুষের সময় কে যথাযথ মূল্যায়ন করেছে, এবার আপনি যদি ব্যক্তিত্ববান মানুষ হতে চান তাহলে আপনাকেও তা মূল্যায়ন করতে হবে।
বাড়িয়ে দিন সহযোগিতার হাত
আপনি যদি সমাজে এরকম অসহায় নিরস্ত্র মানুষদের কে দেখতে পারেন এবং আপনার তাদের জন্য কিছু করার মত সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনি তাদের পাশে দাঁড়ান।
এতে করে আপনি যখন অন্যের দিকে সহানুভূতিশীল নজরে দেখবেন তখন সৃষ্টিকর্তা আপনার উপর রহমত বর্ষিত করবেন।
তাছাড়াও এটা ব্যক্তিত্ববান মানুষের সবচেয়ে ভালো গুণ গুলোর মধ্যে একটি। ব্যক্তিত্ববান মানুষেরা অবশ্যই অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ায়,এবং সে ওই মানুষটিকে বিপদ থেকে মুক্তি হওয়ার পথ বেছে দেয়।
আপনাকেও এরকম করতে হবে, অন্যের বিপদে আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
আপনার কথার মুল্য
এরকম অনেক বাচাল বিদ্যমান যারা প্রতিনিয়ত অবাঞ্ছিত টপিক নিয়ে কথা বলা শুরু করে এবং অন্যের কথার মধ্যে নিজেরা তাদের মতামতকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
এটা আসলে খুবই খারাপ একটি বিষয়। অন্যান্য মানুষেরা যে বিষয়গুলোকে সবচেয়ে বেশি খারাপ নজরে দেখে তার মধ্যে একটি হলো অযথা কথাবার্তা বলা।
ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার কথার মূল্য বুঝতে হবে, যত্রতত্র যেকোনো কথা বললেই চলবে না।
কারণ তারা হুট করে কোন কথা বলে না এবং অযথা যেকোনো ধরনের মন্তব্য থেকে তারা বিরত থাকে।
আর উপরের প্রত্যেকটি বিষয় যখন আপনার রক্তের সাথে মিশে যাবে, তখনই আপনি এটা মনে করবেন যে আপনি ব্যক্তিত্ববান মানুষ হয়ে গড়ে উঠেছেন।