ই কমার্স আসলে কি? এটা কি খায় নাকি মাথায় দেয়? এবং এছাড়াও আমরা প্রায় সময় ই কমার্সের বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে জানতে চাই।
কি সেই ই কমার্সের বৈশিষ্ট্য গুলো? আপনি যদি জানার আগ্রহ পোষণ করেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি একদম শেষ পর্যন্ত দেখতে পারেন।
এই পোস্টটিতে আমি আলোচনা করব ই কমার্স কি এবং এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
ই কমার্স কি?
বর্তমান সময়ে পুরোটাই ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ার কারণে আমরা এখন আমাদের বিজনেস এগুলোকেও ইন্টারনেট ধর্মী করে তুলতে চাই।
যাতে করে যে কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের পণ্য গুলো তাদের কাছে নিয়ে নিতে পারে।
অর্থাৎ বলতে একদম সহজভাবে বলতে গেলে- ই কমার্স হলো ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে মানুষের কাছে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো পৌঁছে দেয়া।
এই বিষয়টিকে আরেকটু বেশি খোলাসা ভাবে আলোচনা হলে এরকমটা বলা যায়- ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে আপনি যদি আপনার বিজনেস এর পণ্য সেবা এগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেন তাহলে এটিকে ই কমার্স বলা হয়।
একে সাধারণত ইলেকট্রনিক কমার্স বলা হয়।
এখন আপনি চাইলে শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পরে এটিকে ভালোভাবে কাস্টমাইজ করার পর আপনি এতে আপনার বিজনেস এর সমস্ত প্রোডাক্ট গুলোর রিভিউ দিতে পারেন।
এবং এর যথার্থ প্রাইস উল্লেখ করে আপনার ভিজিটরদের আপনার প্রোডাক্ট গুলো কিনতে আকর্ষিত করতে পারেন।
এটি একদম সহজ একটি উপায়, এতে আপনাকে কোন ধরনের কষ্ট করতে হয় না। শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটটিকে এসইও ফ্রেন্ডলি করে গড়ে তুলতে হয়।
এবং এটিকে ভালোভাবে সার্চইঞ্জিনে রেঙ্ক করাতে পারলে আপনার পণ্য গুলো বিক্রি করতে আর কোন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় না এটি সময়সাপেক্ষ এবং এটি কার্যকরী।
উন্নত বিশ্বে ই কমার্স এর ব্যবহার:
বর্তমানে প্রায় উন্নত বিশ্ব গুলোর জনগণ তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
যাতে করে তারা ঘরে বসেই ই কমার্স এর মাধ্যমে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হাতের নাগালে পেয়ে যাচ্ছে, এতে তাদের সময় সাশ্রয় হচ্ছে এবং খুব কম সময়ের মধ্যে তারা তাদের পণ্যগুলোকে হাতের নাগালে পেয়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।
এক্ষেত্রে একেবারে ইনস্ট্যান্ট ডেলিভারি ক্ষেত্রে বর্তমানে সর্বাধিক ব্যবহৃত আন্তর্জাতিকই ই কমার্স প্লাটফর্ম হলো amazon.com।
উন্নত বিশ্বের জনগণ অ্যামাজন কে কাজে লাগিয়ে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হাতের নাগালে নিয়ে আসতে পেরেছে।
এক্ষেত্রে তারা চাইলে আমাজনের মাধ্যমে তাদের যেকোনো ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো একেবারে এটু-জেট জিনিসগুলো তাদের ঘরের কিনারে পেয়ে যাচ্ছে।
এক্ষেত্রে শুধু আম্যাজন নয় আরও অনেক আন্তর্জাতিক e-commerce প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলো সহযোগিতায় মানুষ তাদের কাজ গুলোকে আরো বেশি সহজতর করে তুলেছে।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-
উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি সাইট হল ইন্টারন্যাশনাল ই কমার্স সাইট। সহযোগিতায় আপনি যে কোন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আপনার হাতের নাগালে নিয়ে আসতে পারবেন ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে।
বাংলাদেশে ই কমার্স এর ব্যবহার
বাংলাদেশে বেশ কিছু বছর আগে থেকে এই ধরনের অনলাইন শপিং এর দুনিয়ায় প্রবেশ করেছে।
এক্ষেত্রে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে, যেখানে এখন দেখা যাচ্ছে যে প্রায় অনেক ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ক্রয় করা যাচ্ছে।
তবে ই কমার্স এর জনপ্রিয়তা বাংলাদেশ কম হওয়ার মূল কারণ হলো বাংলাদেশি অনেকেই মনে করেন এটা হয়তো ভুয়া।
তারা প্রথমে টাকা দিয়ে দিবেন কিন্তু এরপরে হয়তো তাদের টাকা মেরে খাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়।
তারা আসলে বিশ্বাস করতে পারেন না যে অনলাইন কে কাজে লাগিয়ে তারা ঘরের মধ্যে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য গুলো কে নিয়ে আসতে পারবেন। যা ইন্টারনেটনির্ভর এই বিশ্বে মোটেও কাম্য নয়।
তবে এটা বললেও ভুল হবে যে বাংলাদেশের ই কমার্স এর ব্যবহার খুবই কম।কারন এখানে প্রায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য গুলো তাদের নিজের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে পারছে।
এবং অনেকে আছেন প্রথমে ই কমার্স ব্যবহার করাতে খুব বেশি প্রয়োজন বোধ না করলেও 2-1 বার ই কমার্স এর মাধ্যমে তাদের কাজে সফল হওয়ার পর তারা এখন এটি ব্যবহার করছে তাদের পণ্য গুলো ক্রয় করার জন্য।
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে বাংলাদেশের জনপ্রিয় কয়েকটি ই-কমার্স সাইটের লিংক নিচে থেকে নিয়ে নিতে পারেন।
যেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো খুব সহজেই ক্রয় করতে পারবেন।
তবে আশা করা যায় বর্তমানে এর খুব বেশি একটি ব্যবহার পরিলক্ষিত না হলেও ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরও সুদৃঢ় হবে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ই কমার্স সাইট ব্যবহার করে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে মোটেও দ্বিধাবোধ করবে না।
ই কমার্সের বৈশিষ্ট্য
ই-কমার্সে সাধারণত অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আমি নিচে তুলে ধরছি।
▪ সকল জায়গায় ব্যবহারযোগ্য
▪ সবার জন্য উন্মুক্ত
▪ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত
▪ ইচ্ছা স্বাধীন ব্যবহার
▪ ব্যবসায় সফলতা
▪ ব্যক্তিদের ভোগান্তি কমিয়ে দেয়া
▪ স্বল্প সময়ে অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন
তাহলে এবার আর দেরি না করে উপরে দিয়া প্রত্যেকটি বিষয় খুব ভালোভাবে আলোচনা করা যাক।
সব জায়গায় ব্যবহারযোগ্য
ই কমার্স প্ল্যাটফর্ম গুলো এরকম যে আপনি চাইলে যেকোনো জায়গায় বসেই এটাকে কন্ট্রোল করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি যে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সে ওয়েব সাইটের এডমিন হলেই যথেষ্ট অথবা আপনি যদি আরও 10-15 জনকে ওয়েব সাইটের এডমিন করে দেন তাহলে তারাও যেকোনো জায়গায় বসেই অনলাইনের মাধ্যমে তাদের পণ্যগুলোকে কন্ট্রোল করতে পারবে।
এক্ষেত্রে তাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে না শুধুমাত্র ই কমার্স সাইট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে যখনই তারা কোন অর্ডার পাবে।
তখনই তাদের বিজনেস ইন্ডাস্ট্রিজে কর্মরত ব্যক্তিদের সহায়তায় কিছু কর্মদিবসের মধ্যে ওই ব্যক্তিদের কাছে তাদের প্রোডাক্টগুলো পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।
তাই এটি যেকোনো জায়গায় ব্যবহারযোগ্য
সবার জন্য উন্মুক্ত
ই কমার্স প্লাটফর্ম ওরকম নয় যে আপনি গুটিকয়েক মানুষকে এর আওতাধীন আনবেন।
এক্ষেত্রে যে যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে তারা হয়তো অন্য কোনো সহযোগিতা আপনার ই কমার্স সাইটের নাম শুনে থাকবে।
এবং যখনই তারা শুনবে এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের ফিডব্যাক গুলো দেখবে তখন তারা আপনার ই কমার্স সাইট থেকে তাদের পণ্য ক্রয় করার ইচ্ছা পোষণ করবে।
এজন্য বলা হয়েছে যে ই-কমার্স সাইটগুলো উন্মুক্ত এক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী চাইলেই এই সাইটগুলো থেকে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে।
এক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হলে চলে এবং একজন সৎ মানুষ হওয়া দরকার।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত
এক্ষেত্রে আপনার টিম যদি খুব বেশি বিস্তৃত থাকে এবং আপনার যথেষ্ট সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনি বিশ্বের যে কোন দেশে আপনার ই কমার্স প্লাটফর্ম এর জন্য একটি প্রতিষ্ঠান চালনা করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে বিশ্বের কয়েকটি উন্নত রাষ্ট্রে কয়েকটি সেক্টর পরিচালনা করতে পারেন। এবং এখান থেকে আপনার পণ্যগুলো বেচাকেনা করতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার এই ই কমার্স প্ল্যাটফর্মের অনেকজন ক্র মেম্বার থাকা দরকার।
যাদের সহযোগিতায় আপনি আপনার বিজনেস প্রোডাক্টগুলো কে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে এগুলোকে বিশ্বের যেকোন দেশে লোকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।
আপনার ইচ্ছা যদি আন্তর্জাতিকভাবে আপনার প্রোডাক্ট গুলো কে স্বীকৃতি দেয়ার তে তাকে তাহলে অবশ্যই আপনার প্রোডাক্ট গুলোর মান উন্নয়ন করতে হবে।
এবং তারপরে এগুলো আন্তর্জাতিকভাবে যে কারো কাছে পাঠানোর কথা চিন্তা ভাবনা রাখতে হবে।
ইচ্ছা স্বাধীন ব্যবহার
এটি চাইলেই যেকোনো ধরনের ব্যবহারকারীরা ইচ্ছা স্বাধীন ব্যবহার করতে পারে, এতে করে ওই ব্যক্তিটি কে শুধুমাত্র একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়।
এবং তারপরে তার অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে সে তার সমস্ত কার্যাদি ই কমার্স সাইটের মাধ্যমে সম্পাদন করতে পারেন।
ব্যবসায় সফলতা
ই-কমার্স এর মাধ্যমে ব্যবসা সফলতা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত তখনই হবে যখন আপনি আপনার প্রোডাক্ট গুলো কে ব্যবহারকারী উপযোগী করে তুলবেন।
কারণ অনেক ই কমার্স প্লাটফর্ম রয়েছে যারা প্রোডাক্ট গুলোর পিকচার একরকম রকম দেয় এবং যখন এটি অন্যান্য ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছানো হয় তখন দেখা যায় এর মান প্রায় বিপরীত।
যার কারণে ওই কাস্টমার আর কখনো আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করার ক্ষেত্রে মোটেও দৃষ্টিপাত করেন না।
তবে অনেকেই আছেন যারা এধরনের চক্রান্তের শিকার হওয়ার পর আপনার ওয়েবসাইটের যেকোনো ধরনের যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মের নানা ধরনের বাজে ফিডব্যাক করেন।
এবং যখন তারা প্রমান সহকারে ফিডব্যাক গুলো করে থাকে তখন অন্যান্য ইউজাররা আপনার ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করা থেকে কম করে হলেও শত হাত দূরে থাকে।
তাই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনি যদি সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্যবসার মান উন্নয়ন করতে হবে।
অর্থাৎ আপনি প্লাটফর্মে ওয়েবসাইটে প্রোডাক্টের যে পিকটা দিয়েছেন ঠিক একই রকম ভাবে আপনার প্রোডাক্ট গুলো যেন হয়।
এবং এটি ঠিক একইভাবে যা একজন ইউজার নির্বাচন করে সেরকম ভাবেই যেন তাদের কাছে পৌঁছায়।
ব্যক্তিদের ভোগান্তি কমিয়ে দেয়া
আপনি চাইলে আপনার ই কমার্স প্লাটফর্ম এর যে সমস্ত লাকি কাস্টমার রয়েছেন তাদের ভোগান্তি কমিয়ে দেয়ার জন্য আপনার প্রোডাক্টগুলো তে কিছুটা ডিসকাউন্ট দিতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি আপনার কাস্টমারদের ভোগান্তি অনেকটা কমিয়ে দিতে পারেন এবং তাদেরকে আপনার প্লাটফর্মে দিকে ভালোভাবে আকর্ষিত করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার কাস্টমাররা যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট যখন নির্বাচন করতে যাবে তখন তারা যখন এটিকে তাদের কাছে নিয়ে আসতে চাইবে আপনি চাইলে তাদের কাছে নিয়ে আসার সময়টুকু আরো কমিয়ে দিতে পারেন।
স্বল্প সময়ে অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন
আপনি যদি এই কমার্স এর মাধ্যমে আপনার বিজনেস গুলো পরিচালনা করেন তাহলে আপনি স্বল্প সময়ে অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনাকে আপনার ওই ই কমার্স সাইট রিলেটেড কিছু অ্যাডভার্টাইজমেন্ট যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট অথবা টিভিতে দেখাতে পারেন।
এতে করে ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীরা যখনই আপনাকে কিছুটা ভালো ফিল করবে তখনই এতে ক্লিক করে আপনার ই কমার্স সাইটে চলে আসবে।
এতে করে আপনি অনেক ভিজিটর পেয়ে যাবেন এবং স্বল্প সময়ে আপনার বিজনেস এর জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারবেন।
আর উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো কারণেই ই কমার্স অনেক জনপ্রিয়, আশা করা যায় বাংলাদেশ আস্তে আস্তে পুরোপুরি ই-কমার্স নির্ভর হয়ে যাবে।
যা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের সহায়তা করবে।