আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সবচেয়ে সহজ ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ দেখে নিতে পারেন।
একজন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে নতুন অবস্থায় সফলতা অর্জন করতে চাইলে, প্রথমত আপনি যে বিষয়গুলোতে বেশি কঠিন সেগুলোতে না জড়ানোই ভালো।
এক্ষেত্রে একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি চাইলে খুবই সহজ কিছু কাজ করতে পারেন, যার মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ড সিগনাল বৃদ্ধি করে তারপরে নতুন গিগ আপডেট করতে পারেন।
আজকের এই আর্টিকেলের বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে, সবচেয়ে সহজ ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ সম্পর্কে। সাথে কিছু বোনাস কাজ সম্পর্কে, যা যেকোনো নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কাজে আসতে পারে।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
সবচেয়ে সহজ ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ
সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে যেগুলো সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য এবং যেকোনো নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কার্যকরী হতে পারে সেগুলো হলোঃ
- ব্লগ রাইটিং
- রাইটিং ট্রান্সলেটর
- রেজুমি এবং কভার ডিজাইনার
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ওয়েব ডেভলপিং
- ব্যাকলিংক বিল্ড করা
- ভিডিও এর ইন্ট্রো তৈরি করা
- ভয়েস ওভার আর্টিস্ট
- ইউটিউব এর thumbnails আর্টিস্ট
- গেইমিং হেল্প ইত্যাদি।
একজন নতুন ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে আপনি যদি কাজ শুরু করতে চান, তাহলে উপরে উল্লেখিত কাজগুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন।
আপনি চাইলে এখান থেকে প্রত্যেকটি কাজ বেছে নিতে পারেন, কিংবা যেকোন একটি বেছে নিতে পারেন।
তাহলে আর দেরি না করে এবার এই সমস্ত বিষয়াদি দিয়ে কিভাবে কাজ শুরু করবেন, সেই সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করা যাক।
ব্লগ রাইটিং
ফ্রিল্যান্সিংয়ে একটি বৃহৎ জায়গা দখল করে রেখেছে ব্লগ রাইটিং কিংবা ওয়েব কনটেন্ট রাইটিং।
আপনি যদি ভালো লিখতে পারেন তাহলে এরকম অনেক ওয়েবসাইট বিল্ডার ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন, যারা কিনা আপনাকে হায়ার করবে তাদের ওয়েবসাইটে মানসম্মত কনটেন্ট লেখার জন্য।
এক্ষেত্রে আপনার লেখার কোয়ালিটি অনেক বেশি ভালো হতে হবে এবং ইংরেজিতে যদি আপনি ব্লগ আর্টিকেল পাবলিশ করেন, তাহলে ইংরেজি ভাষা ক্লিয়ার থাকতে হবে।
অর্থাৎ ইংরেজি রিলেটেড যে সমস্ত বিষয়াদি রয়েছে সমস্ত বিষয়াদি আয়ত্তে আনতে হবে। আপনি যদি ইংরেজি পারেন এবং আপনার মধ্যে যদি সৃজনশীলতা থাকে তাহলে আপনি চাইলেই এই পেশায় নিয়োজিত হতে পারেন।
ইংরেজি পারার পরেও আপনি যদি গ্রামার নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব অবস্থায় থাকেন, তাহলে এটা নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
কারণ ইংরেজি যেকোনো একটি ব্লগ আর্টিকেল লেখার পরেই ব্লগ আর্টিকেল এ গ্রামার সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনি চাইলে গ্রামারলি অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
এই অ্যাপটি ব্যবহার করার মাধ্যমে যেকোনো গ্রামার সমস্যা দূরীকরণ করতে পারবেন এবং আপনার আর্টিকেলটি খুব ইউনিক এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি করে গড়ে তুলতে পারবেন।
কাজেই, আপনি যদি সৃজনশীলতার অধিকারী হয়ে থাকেন এবং আপনি যদি এটা মনে করেন যে আপনি ব্লগ আর্টিকেল লেখার জন্য প্রস্তুত, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে এই পেশাকে বেছে নিতে পারেন।
রাইটিং ট্রান্সলেটর
আপনি যদি ট্রান্সলেট করতে খুবই বেশি অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন, তাহলে রাইটিং ট্রান্সলেটর হিসেবে আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জড়াতে পারেন।
এই কাজটি তুলনামূলক খুবই সহজ। এই কাজটি করার জন্য সেরকম কোন স্কিলের প্রয়োজন হয় না।
অর্থাৎ যেকোন ক্লায়েন্ট আপনাকে বিভিন্ন রকমের ডকুমেন্ট কিংবা ব্লগ আর্টিকেল দিতে পারে, যেগুলোকে বিভিন্ন ভাষায় রূপান্তর করতে হতে পারে।
এই কাজটি করার জন্য আপনি চাইলে গুগল ট্রান্সলেট কিংবা এই রিলেটেড ট্রান্সলেটর টুলস ব্যবহার করতে পারেন, যেগুলোর সহায়তায় আপনি এই কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন।
মুলত, ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের মধ্যে এই কাজটি মোটামুটি রকমের সহজ একটি কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রেজুমী এবং কভার ডিজাইনার
এছাড়াও এরকম অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা কিনা রেজুমি এবং কভার ফটো ডিজাইন করে থাকে।
আপনি যদি রেজুমী ডিজাইন করতে চান কিংবা কভার ডিজাইন করতে চান, তাহলে সেরকম কোনো অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োজন নেই।
আপনি চাইলে বিভিন্ন রকমের টুলস ব্যবহার করার মাধ্যমে এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন এবং একজন রেজুমী এক্সপার্ট হয়ে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিয়োজিত হতে পারবেন।
ফ্রিতে রেজুমি ডিজাইন করার জন্য কিংবা কভার ফটো ডিজাইন করার জন্য আপনি চাইলে ক্যানভা এডিটর ব্যবহার করতে পারেন। এই টুলসটি যেকোন রকমের রেজুমী এবং কভার ফটো ডিজাইন করে দিবে।
এই টুলসটি একদম ফ্রিতে আপনাকে বিভিন্ন রকমের কভার ফটো ডিজাইন করার মত এক্সেস দিয়ে দিবে।
তবে আপনি যদি প্রফেশনালি কাজ করতে চান, তাহলে তাদের প্রিমিয়াম প্ল্যান নিঃসন্দেহে ক্রয় করতে পারেন। যাতে করে আপনি আরো বেশি পরিমাণে অ্যাক্সেস নিতে পারেন।
তবে নতুন হিসেবে প্রিমিয়াম প্ল্যান ক্রয় না করে ফ্রী প্ল্যানের মাধ্যমে আপনি আপনার কাজটি সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।
এটি নিতান্ত একটি সহজ ফ্রিল্যান্সিং পেশা।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইনকে সহজ বললেও খুব বেশি একটা ভুল হবেনা। তবে অনেকের কাছে এটা পাহাড়সম কঠিন মনে হতে পারে।
আপনি যদি সঠিক অ্যাঙ্গেলে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে পারেন, তাহলে এই কাজ করে প্রতি মাসে কয়েক হাজার ডলার গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করা সম্ভব।
এক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক মোমেন্টে এগোতে হবে এবং তারপরে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে ফ্রিল্যান্সিংয়ে যোগাতে হবে।
কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শুরু করবেন কিংবা কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবেন, সেই রিলেটেড একটি আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা আছে।
জেনে নিনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার নিয়ম
উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি হয়তো আপনাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন এক্সপার্ট বানাতে পারবে না, কিন্তু উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি দেখলে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড বেসিক জিনিস গুলো জেনে নিতে পারবেন।
ওয়েব ডেভলপিং
এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার মত আরেকটি সহজ লেভেলের কাজ হলো, ওয়েব ডেভলপিং করে ফ্রিল্যান্সিংয়ে জড়িয়ে যাওয়া।
এক্ষেত্রে যেকোন রকমের একটি ডেভেলপমেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে নিলে আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে জড়াতে পারবেন এবং এখান থেকে বেশি পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।
ব্যাকলিংক বিল্ড করা
ফ্রিল্যান্সিংয়ে এসইও রিলেটেড ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাটাগরির মধ্যে আরেকটি সহজ এবং খুবই লাভজনক একটি পেশা হলো ব্যাকলিংক বিল্ড আপ করা।
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে বিভিন্ন রকমের ফোরাম সাইটে যে কোন ক্লায়েন্টের আর্টিকেল পাবলিশ করার মাধ্যমে তাদেরকে ব্যাকলিংক পাবলিশ করে দিতে পারেন।
এতে করে আপনি বেশি পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে এই কাজটি করার পূর্বে কিছু প্র্যাকটিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট এবং প্র্যাকটিক্যাল কাজের প্রয়োজন রয়েছে।
ভিডিও এর ইন্ট্রো তৈরি করা
আপনি যদি ভিডিও এডিটর হয়ে থাকেন, তাহলে ভিডিও ইন্ট্রো তৈরি করার মাধ্যমে আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে যাত্রা শুরু করতে পারেন।
যেকোন ভিডিও এর ইন্ট্রো তৈরি করার ক্ষেত্রেও আপনার সৃজনশীল মনোভাবের প্রয়োজন হবে। কারণ ইন্ট্রো দেখার মাধ্যমে যে কেউ আপনার ভিডিওর প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং ভিডিও দেখার কাজ কন্টিনিউ করবেন।
কাজেই আপনি যদি মনে করেন আপনি ভিডিও এডিটর তৈরি করা কাজটি সহজেই তৈরি করতে পারবেন, তাহলে আজকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে ইউটিউব এর ভিডিও কিংবা অন্য যে কোন প্লাটফর্মে ভিডিও ইন্ট্রো মেকার হয়ে যান।
ভয়েস ওভার আর্টিস্ট
আপনার গলার ভয়েস যদি অবস্থা খুব বেশি ভালো হয়ে থাকে, তাহলে আপনি চাইলে voice-over আর্টিস্ট হতে পারেন।
এই কাজটি মূলত কিছু মানুষের জন্য খুবই সহজ একটি কাজ। আবার অনেকের জন্যে পাহাড় সময় একটি কঠিন কাজ।
এক্ষেত্রে রিকোয়ারমেন্ট হিসেবে আপনাকে সৃজনশীল মনোভাবের হতে হবে এবং আপনার গলার ভয়েস ভালো হতে হবে।
ইউটিউব এর থাম্বনেইল আর্টিস্ট
ইউটিউব ভিডিওতে থাম্বনেইল তৈরি করে দিয়েও আপনি চাইলে টাকা আয় করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে পুনরায় ক্যানভা টুলস ব্যবহার করতে পারেন এবং এই টুলসটির সহায়তার মাধ্যমে থাম্বনেইল তৈরি করতে পারেন।
গেইমিং হেল্পার
আপনি যদি মনে করেন আপনি যেকোনো একটি গেমের এক্সপার্ট এবং সেই রিলেটেড জ্ঞান আপনার মধ্যে আছে, তাহলে আপনি চাইলে এই রিলেটেড গিগ ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে তৈরি করতে পারেন।
অর্থাৎ ইন্টারনেট এরকম অনেকেরই আবির্ভাব ঘটে যায় কিনা গেইমিং রিলেটেড হেল্প নিতে চায়।
আপনি যদি তাদেরকে এই রিলেটেড হেল্প করতে পারেন, তাহলে এখান থেকে প্রতিমাসে ভালো একটি এমাউন্টের টাকা আয় করতে পারবেন।
আরো কিছু সহজ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ
এছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার মতো আরো যে সমস্ত সহজ কাজ আপনি বেছে নিতে পারেন, সেগুলোর মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য আরো কয়েকটি লিস্ট নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- কপিরাইটিং জব।
- ভিডিও ট্রান্সক্রাইব।
- সোসিয়াল মিডিয়া ম্যানেজার।
- অটো লাইক অটো ফলোয়ার।
- ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি
উপরে উল্লেখিত কাজগুলো ফ্রিল্যান্সিংয়ের সহজ কাজ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং যেকোনো নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে এ সমস্ত কাজগুলো শুরু করে নিতে পারেন।
শেষ কথাঃ আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান, তাহলে আপনাকে সঠিক অ্যাঙ্গেলে এগোতে হবে এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে জড়িয়ে পড়তে হবে।
কারণ, আপনি যদি আপনার প্রোফাইলকে খুব বেশি পরিমাণে একটিভ করতে পারেন এবং তারপরে কোনো একটি ভুল পদক্ষেপ নেন, তাহলে যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপনার অ্যাকাউন্টটি সাসপেন্ড করে দিতে পারে।
সেজন্য যেকোনো প্লাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শুরু করার পূর্বে অবশ্যই যেকোনো একটি কাজের উপর পিএইচডি করে নিন। অর্থাৎ এক্সপার্ট হয়ে যান।
কারণ, কাউকে কোন কিছু শেখানোর পূর্বে আগে নিজে ওই বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হয়। অন্যথায়, এই কাজটি শেখানো সম্ভব হয়না।
উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সবচেয়ে সহজ ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ, যা যেকোন ফ্রিল্যান্সার শুরু করে দিতে পারে।
যদিও এখানে শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সবচেয়ে সহজ ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ আলোচনা করা হয়নি, বরং আরও কিছু বোনাস কাজ যুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
এই কাজগুলোর দ্বারাও আপনি চাইলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।