অনলাইনের সাথে সংযুক্ত কিন্তু গুগল এডসেন্স এর নাম কখনও শুনেননি এরকম মানুষ আপনি রীতিমত খুঁজেই পাবেন না। গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম কি?
আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং যে কোন একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন, তখন আপনার মূল উদ্দেশ্য থাকে এই ওয়েবসাইট থেকে কিছু আয় করা।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
গুগল এডসেন্স কি?
ইন্টারনেটের জগতে ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার সর্বাপেক্ষা ভালো মাধ্যম হলো গুগল এডসেন্স। গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনি স্বল্প সময়ে অধিক হারে আয় করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে সর্বপ্রথম একটি ইউনিক ওয়েবসাইট খুলতে হবে এবং তারপর এখানে কিছু কনটেন্ট লেখার মাধ্যমে গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
কিভাবে google adsense account খুলবো? বা গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম কি? এই ট্রিক ফলো করার আগে আপনাকে আগে গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল নেয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
আর এই প্রস্তুত হওয়ার ব্যাপারে গুগল এডসেন্সের অনেক পলিসি রয়েছে। যেগুলো আপনাকে অবশ্যই মান্য করতে হবে এবং তারপরে একটি গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরী করে সেটি অনুমোদনের জন্য তাদের কাছে আবেদন করতে হবে।
গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম
এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে নিচের দেয়া লিঙ্কে ভিজিট করতে হবে। এটা গুগল এডসেন্স এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট।
উপরের দেয়া লিংকে ভিজিট করার পর আপনাকে ক্লিক করতে হবে Get Started এই অপশনটিতে।

এরপর আপনার সামনে একদম নতুন একটি পেজ ওপেন হবে। যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ তথ্য এবং ইমেইল এড্রেস দিতে হবে।
Your website: এখানে আপনি আপনার যে ওয়েবসাইট থেকে গুগল এডসেন্স এর জন্য অ্যাপ্রভাল নিতে চান, কিংবা গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে চান সেই ওয়েবসাইটের লিংক কপি করে এনে বসিয়ে দিন।
Your Email Address: এখানে আপনি যেই ইমেইল এড্রেস এর সহযোগিতায় গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে চান সেটি দিতে হবে।
অনেকেই মনে করেন গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য ইমেইল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এখানে ইমেইল এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটের নাম অথবা আপনার ব্যান্ডের নাম যুক্তকরে একটি ইমেইল এড্রেস খোলাকে বুঝানো হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার ওয়েবসাইট এর নাম যদি হয় – “Blogger lab” এবং এই ওয়েবসাইট থেকে যদি আপনি গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পেতে চান, তাহলে আপনাকে এই রিলেটেড একটি ইমেইল এড্রেস তৈরি করতে হবে।
যেমন, আপনি চাইলে আপনার ইমেইল এড্রেসটি এভাবে তৈরি করতে পারেন- bloggerlab@gmail.com অথবা এই রিলেটেড যদি আপনার খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে কিছুটা পরিবর্তন এনেও করতে পারেন।
এবার আপনাকে নিচের দেয়া দুইটি অপশন থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন একটি সিলেক্ট করে তারপর Save and Continue বাটনটিতে ক্লিক করুন।

এবার আপনি যদি .blogspot .com এই ডোমেইনটি সাথে গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল নিতে চান কিংবা গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে চান তাহলে আপনাকে কনফার্ম দিতে হবে।
তবে প্রায় ক্ষেত্রে আপনি যদি টপ লেভেল ডোমেইন অর্থাৎ. com, .net ইত্যাদির সহকারে গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে এই কনফার্ম এর বিষয়টি নাও আসতে পারে।
তবে যদি আসে তাহলে আপনি এটাকে কনফার্ম করার জন্য Continue in blogspot domain অপশন টিতে ক্লিক করুন।

তাহলেই আপনার কিভাবে google adsense account খুলবো এই প্রশ্নটির সমাধান পেয়ে যাবেন। যার অর্থ এটা দাঁড়ায় যে আপনি যথাযথভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনি যখন গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন, তখন এটি সাধারনত ১ দিন থেকে শুরু করে আরো এক সপ্তাহ, ১৫ দিন বা আরো বেশি সময় নিতে পারে।
এবং আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন, কনটেন্ট সবকিছু যদি এডসেন্সের পলিসি মধ্যে পড়ে তাহলে আপনি এডসেন্স একাউন্ট থেকে এপ্রোভাল পেয়ে যাবেন।
উপরে দেয়া পদ্ধতিটি হল, কিভাবে আপনি যখন একদম নতুন কোন গুগল এডসেন্স তৈরি করবেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে যে পদ্ধতি পালন করতে হবে সেটি।
আগের এডসেন্স একাউন্টে ডোমেইন যোগ করা
এবার একদম সহজেই জেনে নিন যদি আপনার পূর্বে কোন গুগল এডসেন্স একাউন্ট থাকে এবং এতে আপনি আরেকটি ডোমেইন সেটআপ করতে চান, তাহলে এটা কিভাবে করবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে সর্ব প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল আপনার পূর্বে যে গুগল এডসেন্স একাউন্ট রয়েছে, তাতে লগইন থাকতে হবে।
এবং তারপর বাম পাশের মেনু বার অপশনটির উপর ক্লিক করলে আপনি দেখতে পারবেন Site নামক একটি অপশন রয়েছে। এটাতে ক্লিক করুন।
এটাতে ক্লিক করার পর নতুন একটি পেইজের উপরের দিকে Add Site ক্লিক করলে আপনার নতুন ওয়েব পেজ যুক্ত করার অপশন পেয়ে যাবেন।

এরপর এখানে আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেমটি পুরোপুরি দিলে চলবে না। এজন্য আপনাকে একটি ট্রিক ফলো করতে হবে। আপনার ডোমেইন নেমটি যদি এরকম হয় https://www.xyz.com তাহলে এটাকে পুরোপুরি না দিয়ে শুধুমাত্র আপনাকে ডোমেইন নেমটি দিতে হবে।
তাহলে এটা এরকম হবে xyz.com এবং এড্রেসটি যথাযথভাবে দেয়ার পরে আপনাকে Next নামক অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।

এবার আপনাকে ভেরিফিকেশন করার জন্য গুগল এডসেন্স কিছু এইচটিএমএল কোড দিবে যে আপনার ওয়েবসাইটে যথাযথভাবে স্থাপন করতে হবে।

এই কোড গুলো কে কপি করে এরপর আপনার ওয়েবসাইট এর যে স্থানে আপনি এইচটিএমএল এডিট সংগ্রহ করেছিলেন, সেই পেজে চলে যেতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি ব্লগার ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ব্লগার সাইটে ড্যাশবোর্ড থেকে Theme-Edit Html যথাক্রমে ক্লিক করার পর আপনি এইচটিএমএল এডিট করার সেকশন পেয়ে যাবেন।
এরপরও এইচটিএমএল কোড গুলোর একদম শুরুর দিকে আপনি <head> নামক যে অপশন পেয়ে যাবেন, ঠিক এর নিচেই গুগল এডসেন্স কর্তৃক দেয়া কোডগুলো বসিয়ে ফেলতে হবে।
ঠিক একই রকমভাবে আপনার যদি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েব সাইট থাকে তাহলে গুগল এডসেন্স এর কোড একই লোকেশনে <head>এর নিচে বসিয়ে দিতে হবে।
এবং সবশেষে এটিকে সেভ করে দিতে হবে।

এবার আপনাকে আবার পূর্বের ওই পেইজটিতে আসতে হবে যেখান থেকে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সে দেয়া এইচটিএমএল কোড গুলো কপি করেছিলেন।
এবং তারপর আপনি যখন Submit নামক বাটনটিতে ক্লিক করবেন, তখনই এটা ভেরিফাই হয়ে গিয়ে আপনার এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করা হয়ে যাবে।
এবং এক্ষেত্রে আপনাকে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না।
আপনি সাধারণত ১ দিনের ভিতরেই গুগল এডসেন্স এর কাছ থেকে একটি নোটিশ পেয়ে যাবেন যে আপনার ওয়েবসাইটটি আদৌ গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য উপযুক্ত কিনা।
আর উপরে উল্লেখিত দুটি উপায়ে আপনি খুব সহজে গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায় কি?
তাহলে এবার জেনে নিন গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পেতে হলে এবং গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে হলে আপনার সর্বোচ্চ যে রকমের সামর্থ্য থাকার দরকার, সে সম্পর্কে।
এখানে সামর্থ্য বলতে আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে কোন কোন কাজ সম্পাদন করে গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রুভাল সহজেই পেয়ে যাবেন সেটা বোঝানো হয়েছে।
ওয়েবসাইটের ডিজাইন
আপনি যদি আপনার ব্লগার কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের জন্য গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট খুলে এখান থেকে অ্যাপ্রভাল নিতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনার সাইটে ইউনিক ডিজাইন থাকতে হবে।
এক্ষেত্রে ইউনিক ডিজাইন বলতে আপনার সাইট অবশ্যই পরিষ্কার এবং যেকোনো ধরনের শেয়ার ট্রিগার কিংবা অন্যান্য কন্টাক্ট পেজ সাইটে যুক্ত করে রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার ভিজিটররা যাতে আপনার সাথে ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারেন এবং আপনার সাইট সম্পর্কিত যেকোন তথ্যাদি কিংবা ভুলভ্রান্তি জানাতে পারে, এজন্য আপনাকে কাজ করতে হবে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটে কয়েকটি পেইজ খুলতে হবে। যা গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
- About
- Contact
- Privacy And Policy
উপরে উল্লেখিত পেজগুলো অবশ্যই তৈরি করতে হবে। যাতে করে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেতে আপনার কোন ধরনের বেগ পেতে হয়না।
এরপর আপনাকে যা করতে হবে সেটা হল আপনাকে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইট রিলেটেড সোসিয়াল গণমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
যেমন, আপনি চাইলে আপনার বিজনেস রিলেটেড ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি একাউন্ট তৈরি করে তারপরে গুলোর লিংক আপনার ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত করতে পারেন।
আর গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড খুব একটি ভূমিকা পালন করে না। শুধু তা নয়, এটি আপনার ওয়েবসাইট রেংকিং এর ক্ষেত্রে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
কনটেন্ট
গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয়টির উপর নজর দিতে হবে, সেটি হলো আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা কনটেন্ট।
এই কনটেন্ট গুলো এমন ভাবে লিখতে হবে যাতে করে এই রিলেটেড কিংবা আপনার কনটেন্ট এর সাথে মিল রেখে অন্য কোথাও আর কোন কনটেন্ট খুঁজে না পাওয়া যায়।
আর এভাবে যদি আপনি খুব বেশি না হলেও ৭-৮ আর্টিকেল লিখে তারপর গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করার উদ্দেশ্যে মাঠে নামেন, তাহলে অবশ্যই আপনি এডসেন্সের অনুমোদন পেয়ে যাবেন।
অবশ্যই, এটা খেয়াল রাখবেন যে আপনার কনটেন্ট যেন তথ্যবহুল হয় এবং এই রিলেটেড ইমেজ এবং কিছু ইনফোগ্রাফিক্স যাতে আপনার কনটেন্ট যুক্ত থাকে।
এবং কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে কোন সেক্সুয়াল অ্যাক্টিভিটি রিলেটেড ইনফোরমেশন অথবা সন্ত্রাসীমূলক কনটেন্ট পাবলিশ করা থেকে বিরত থাকুন।
কারণ, এই প্রত্যেকটি জিনিসই গুগল এডসেন্সের পলিসি ভায়োলেট করে। যা আপনার গুগল এডসেন্স থেকে অ্যাপ্রভাল পাওয়ার ক্ষেত্রে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার জন্য এছাড়া আর কোন কষ্টই আপনাকে করতে হবে না।
শুধুমাত্র উপরের উল্লেখিত কথাগুলো মনে রেখে এবং এগুলো আপনার ওয়েবসাইটে এপ্লাই করে তারপর আবেদন করুন।