মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় – ১০ টি উপায়

নানা কারণে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। যে কারো মুখের দুর্গন্ধ খুবই বিরক্তিকর এবং অসহ্য একটি ব্যাপার। আপনার যদি খুব দুর্গন্ধ হয় তারপরে কেউই আপনার ধারে আসতে চাইবে না। সে ক্ষেত্রে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় জেনে নেয়া বাঞ্ছনীয়।

আপনি যদি কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করেন তাহলে আপনার মুখে দুর্গন্ধ থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন। এবং যে কারো সাথে মন খুলে কথা বার্তা বলতে পারেন।

সেজন্য, আপনাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তাহলে আপনি এই জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এবং যে কারো সাথে মন খুলে কথা বলতে পারবেন।

মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয় কি?

আপনি যদি সর্বপ্রথম লক্ষ্য করেন আপনার মুখে দুর্গন্ধ রয়েছে তাহলে সর্বপ্রথম পদ্ধতি হিসেবে আপনার করনীয় কি? এই সমস্যা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য আপনাকে কি করতে হবে?

আপনি যদি সঠিক কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করেন তাহলে ঘরোয়া উপায়ে অথবা ডাক্তারি চিকিৎসা মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

এক্ষেত্রে যখনই আপনি লক্ষ্য করবেন আপনার মুখে দুর্গন্ধ রয়েছে, তখন আপনাকে যথাসম্ভব মানুষের কাছাকাছি গিয়ে কথা বলার অভ্যাসটা ত্যাগ করতে হবে।

আপনি হয়তো দূরে থেকে কথা বললে আপনার মুখের দুর্গন্ধ এতটাও কারো নাকে আসবে না। তবে, আপনি যদি কোন ব্যক্তির একেবারে কাছাকাছি গিয়ে কানের পাশে গিয়ে ফিসফিস করে কথা বলেন, তাহলে সেই ব্যক্তি আপনার মুখের দুর্গন্ধ তীব্রভাবে লক্ষ্য করবেন।

সে ক্ষেত্রে আপনি যদি এই সমস্যার মধ্যে জর্জরিত থাকেন তাহলে যে কারো সাথে কথা বলার সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন। যাতে করে কেউ আপনার মুখের তীব্র দুর্গন্ধ টের না পায়।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

এবার আপনি যদি মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় সম্পর্কে তথ্য জেনে নিতে চান, তাহলে যে সমস্ত উপায় দুর্গন্ধ দূর করতে পারবেন; সেই সমস্ত উপায় নিচে তুলে ধরা হলো।

  • দিনে দুইবার দাঁত মাজুন বা ব্রাশ করুন।
  • মধু এবং দারুচিনি।
  • লবঙ্গ।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
  • চুইঙ্গাম খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • চা পান করার অভ্যাস করুন।
  • নারিকেল তেল। ইত্যাদি।

আপনি যদি উপরে উল্লেখিত পদক্ষেপ অনুসরণ করেন তাহলে মুখের দুর্গন্ধ থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন।

তাহলে আর দেরি না করে এখনি এ সমস্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে ডিটেইলস আলোচনা করা হয়।

দিনে দুইবার দাঁত মাজুন বা ব্রাশ করুন

মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো দাঁত ব্রাশের অনীহা। অর্থাৎ, আপনি যদি দাত ব্রাশ না করেন তাহলে আপনার মুখের দুর্গন্ধ থাকা খুবই স্বাভাবিক।

সেজন্য, পূর্বে থেকে যদি দাঁত মাজার অভ্যাস থেকে থাকে এবং আপনি যদি দাত ব্রাশে অনিহা প্রকাশ করেন বা সেই অভ্যাস থেকে থাকে, তাহলে এই অভ্যাস ত্যাগ করুন।

জেনে নিন: লম্বা হওয়ার উপায় ও ব্যায়াম সমগ্র

দিনে অন্তত দুইবার দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সেটা হতে পারে রাতে ঘুমানোর পূর্বে, এবং দিনের বেলা যে কোন সময়। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে সকাল বেলা দাঁত ব্রাশ করতে পারেন।

মধু এবং দারুচিনি

মধু এবং দারুচিনি উভয়েরই শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে এবং মাড়িকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে।

ক্ষেত্রে আপনি মুখের দুর্গন্ধ দূরীকরণের জন্য মধু এবং দারুচিনির ব্যবহার করতে পারেন। মধু এবং দারুচিনির মিশ্রিত পেস্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার দাতের নানাবিধ উপকার হয়।

দাঁতে নিয়মিত মধু এবং দারুচিনির পেস্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার দাঁতের ক্ষয় রোধ হবে এবং দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হবে, এছাড়াও মুখের তীব্র দুর্গন্ধ থেকেও মুক্তি পাবেন

লবঙ্গ

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য অন্যতম একটি উপায় হল লবঙ্গ ব্যবহার করা। নিয়মিত লবঙ্গ ব্যবহার করার মাধ্যমে মুখের দুর্গন্ধ দূর করা যেতে পারে।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা নানা রোগের ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখ থেকে শরীরকে মুক্ত রাখা যায়।

এক্ষেত্রে আপনার মুখের মধ্যে দুর্গন্ধ বিরাজমান থাকলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

সেজন্য, মুখে দুর্গন্ধ অনুভব করলে অন্যান্য পদক্ষেপের সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে পারেন। যাতে করে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।

চুইঙ্গাম খাওয়ার অভ্যাস করুন

চুইংগাম খাওয়ার অভ্যাসে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হতে পারে৷ এছাড়াও, বিভিন্ন সায়েন্টিস্ট এটা প্রমাণ করেছেন যে, চুইংগাম খাওয়ার অভ্যাস করলে আপনি বিভিন্ন রকমের অপ্রীতিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ব্যাপারটা এরকম যে, যখনই আপনার খুব বেশি পরিমাণে টেনশন লক্ষ্যণীয় হবে তখন আপনি চুইংগাম চিবানোর বদৌলতে এই টেনশন থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিংবা সেই সময়ের দুশ্চিন্তা কিছুটা লাঘব করতে পারেন।

জেনে নিন: গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা

এছাড়াও, মুখের দুর্গন্ধ দূর করে আপনার মুখের বাতাসকে রিফ্রেশমেন্ট দেয়ার জন্য চুইংগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন।

এতে করে যখন আপনি হা করবেন তখন চুইংগামের ঘ্রান বের হবে 🙂 আর আপনার আশেপাশে থাকা ব্যক্তিরা পুরোপুরি মনমুগ্ধকর এবং ফ্রেস বাতাস উপভোগ করবে।

সেজন্য মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য চুইংগাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে।

চা পান করার অভ্যাস

এছাড়াও, দুর্গন্ধ দূর করার একটি অন্যতম উপায় হতে পারে নিয়মিত চা পান করা। আপনি চাইলে দুধ চা এর পরিবর্তে রং চা (লাল চা) খেতে পারেন।

এতে করে বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখ থেকে যেভাবে আপনি দূরে থাকবেন, ঠিকএকইরকমভবে মুখের দুর্গন্ধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন।

কারণ, আপনি হয়তো এই সম্পর্কে জানেন যে সংস্থা খাওয়ার অভ্যাস আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। কিংবা আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করিয়ে দেয়।

সেজন্য, এসমস্ত নানাবিধ উপকার পাওয়ার জন্য রং চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

নারিকেল তেল

নারিকেল তেলে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নিমিষে গন্ধ সৃষ্টি করা ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। এবং যখনই মুখে ধর্ম দুর্গন্ধ সৃষ্টি করা ব্যাকটেরিয়া মৃত্যুবরণ করবে, তাহলে মুখে দুর্গন্ধের পরিবেশ তৈরী করে মুখের দুর্গন্ধ কে ছড়াবে?

সেজন্য আপনি চাইলে দুর্গন্ধ দূর করার জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।

এক্ষেত্রে এক চামচ নারিকেল তেল মুখে নিয়ে ভালো করে কুলি করুন। কম করে ৫ মিনিট করতে হবে। তারপরে আপনাকে হালকা গরম পানি ব্যবহার করার মাধ্যমে পুরো মুখ কুলি করে ধুয়ে ফেলতে পারেন।

এই অভ্যাস নিয়মিত করার মাধ্যমে মুখের দুর্গন্ধ থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন।

ডাক্তারি চিকিৎসা মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

উপরে যে সমস্ত পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে আপনি চাইলে মুখের দুর্গন্ধ থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন, সেই সম্বন্ধে তথ্য৷

তবে আপনি যদি একজন ভালো ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তাহলে বিভিন্ন রকমের ঔষধ সেবন করার মাধ্যমে এই দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

আপনি একজন ভালো ডেন্টিস্টের শরণাপন্ন হতে পারেন এবং তাদের দেয়া নিয়ম নীতি অনুসরণ করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

এছাড়াও ইউটিউবে এরকম অনেক ভিডিও রিসোর্স রয়েছে৷, যে সমস্ত ভিডিও অনেক তথ্যবহুল এবং দুর্গন্ধ দূর করার জন্য অনেকটা কার্যকরী।

সেজন্য, অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ছাড়াও আপনি চাইলে ইউটিউব থেকে বিভিন্ন রকমের তথ্যবহুল ভিডিও সংগ্রহ করে সেই অনুযায়ী কাজ করে দুর্গন্ধ থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন।

শেষ কথা: মুখের দুর্গন্ধ আপনার আশেপাশে থাকা ব্যক্তিবর্গের জন্য খুবই বিব্রতকর এবং বিরক্তিকর একটি অধ্যায়। যেকোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এই রকমের দুর্গন্ধ পছন্দ করবে না।

এছাড়াও আপনি যদি এমন কারো সাথে কথা বলে মুখের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে দেন, যার সাথে কথা বললে মুখের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল না তাহলে এর প্রভাব আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

সেজন্য মুখে দুর্গন্ধ যখনই লক্ষ্যণীয় হবে তখন নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ এই সমস্যা থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুক্তি নিয়ে নিন।

ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top