আমাদের মধ্যে যে বা যারা নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার চিন্তাভাবনা করছেন। তারা সর্বপ্রথম এটা নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পড়ে আছে যে, ইউটিউবে কি কি রকমের ভিডিও করলে ভালো হবে?
একজন বিগিনার হিসেবে নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রথমত, আমাদেরকে কিরকম ভিডিও তৈরি করার প্রয়োজন রয়েছে, সে যায়গায় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়।
আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে, একজন নতুন ইউটিউবার হিসেবে কি কি রকমের ভিডিও তৈরি করলে আপনি সফল হতে পারেন, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
ইউটিউবে কি কি ভিডিও তৈরি করব?
ইউটিউব হলো একটি ওপেনসোর্স প্লাটফর্ম। যেখানে আপনি চাইলে আপনার পছন্দমত যেকোন রকমের ভিডিও আপলোড দিতে পারেন।
তবে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে এরকম কোন নিস খুঁজে বের করতে হবে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার চ্যানেল অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
ইউটিউবে আপলোড দেয়ার জন্য আপনি যদি আপনার পছন্দ মত কোন একটি নিস খুঁজে বের করতে পারেন, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। তবে যাদের এই সম্পর্কে ধারণা কম, তারা নিশ্চয়ই একটি নিস খোজ করতে হিমশিম খেয়ে যান।
সেজন্য আপনাকে প্রথমত সবকিছু চিন্তা ভাবনা করে এমন একটি ক্যাটাগরি খুঁজে বের করতে হবে, যে ক্যাটাগরির মধ্যে ভিডিও তৈরি করতে আপনার পছন্দ হয় কিংবা আপনার ভালো লাগে।
আপনার পছন্দ অনুযায়ী আপনি যদি নিস সিলেক্ট করে নিতে পারেন, তাহলে সেটাও অনেক ভালো একটি বিষয়। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা খুঁজে বের করতে অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেন।
আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন, তাহলে এই আর্টিকেলের আলোচনায় আপনি আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি নিস বের করে নিতে পারবেন। যেখানে ভিডিও আপলোড দিয়ে আপনি প্রচুর পরিমানে আয় করতে পারবেন।
ভিডিও তৈরি করার কিছু টপিক
একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি যে সমস্ত ক্যাটাগরির মধ্যে ভিডিও তৈরি করতে পারেন, সেগুলোর মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য এবং সবচেয়ে কার্যকরী কয়েকটি নিচে মেনশন করা হলো।
- বই রিভিউ।
- গেম রিভিউ।
- প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি
- প্রমো ভিডিও তৈরি করা
- কমেডি ভিডিও তৈরি করা।
- প্রোডাক্ট রিভিও করা।
- কসমেটিক রিলেটেড বিষয়াদি রিভিউ করা।
- কিভাবে কি হয়
- ট্রেন্ডিং বিষয় নিয়ে আলোচনা করা
- ভ্রমণ ভিডিও করা।
- ভিডিও কনটেস্ট করা।
- লাইভ স্টিম করা
- খেলার ভিডিও আপলোড করা
তাহলে আর দেরি না করে এখনই এই সমস্ত টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
বই রিভিউ
আপনি যদি একজন বইপ্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি চাইলে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে বই রিভিউ ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।
বই রিভিউ ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে সে রকম কোনো খাটনি টানতে হবে না, শুধুমাত্র নতুন রিলিজ করা বই গুলো কালেক্ট করে নিতে হবে।
এক্ষেত্রে নতুন রিলিজ করা বইগুলোর সূচিপত্র ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে এবং তারপরে আপনি চাইলে এই বইগুলো আপনার অডিয়েন্সের সামনে তুলে ধরতে পারেন।
এই বইয়ের পরে, যখন আপনি বই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন এবং তারপরেই তথ্য অনুযায়ী বইপ্রেমীদের আপনার বই রিভিউ এর কাজ দেখাতে পারেন।
গেম রিভিউ
আপনি যদি একজন গেম প্রেমী হয়ে থাকেন এবং সারাক্ষণ গেম খেলতে পছন্দ করেন, তাহলে আপনি চাইলে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে গেম রিভিউ ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।
গেম রিভিউ ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার মাধ্যমে আপনি যেভাবে আপনার গেমিং স্কিল বৃদ্ধি করতে পারবেন, ঠিক একইভাবে গেম ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে আপনি ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন।
কোন একটি গেম খেলার ক্ষেত্রে আপনার যদি অনেক ভালো অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, তাহলে আপনি চাইলে এই পপুলার গেম এর উপর ভিত্তি করে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পরে এখানে আপনার পছন্দের ভিডিও স্ট্রিম করে কিংবা গেমের ভিডিও আপলোড করে আপনি ইউটিউব চ্যানেল মেন্টেন করতে পারেন।
কমেডি ভিডিও তৈরি করা
আপনাদের যদি একটি টিম থেকে থাকে, তাহলে আপনারা চাইলে বিভিন্ন রকমের ভিডিও আইডিয়া কপি করে কমেডি ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
এসব ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে আপনি যেভাবে মানুষকে হাসাতে পারবেন, ঠিক সেভাবে আপনি অনেক বেশি পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।
তবে নতুন হিসেবে কমেডি ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি এর দিকে নজর রাখা সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি
আপনার যদি বড়োসড়ো একটি টিম থেকে থাকে, তাহলে আপনি চাইলে প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করতে পারেন। যার মাধ্যমে আপনি খুব বেশি পরিমাণে ইউটিউব চ্যানেলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে পারেন।
প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করার পূর্বে আপনাকে বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করতে হবে এবং যেখানে গিয়ে আপনি ভিডিও তৈরি করার মত উপযোগী, সেখানে গিয়ে প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করতে হবে।
ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করবেন।
প্রোডাক্ট রিভিও করা
বর্তমানে রিলিজ হওয়া কোন একটি প্রোডাক্ট কিংবা সবচেয়ে পপুলার কিছু প্রোডাক্ট আপনি চাইলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের রিভিউ করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেলে প্রডাক্ট রিভিউ করার মাধ্যমে আপনি যেভাবে ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন, ঠিক ওইরকম ভাবে প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক থেকে আপনি আয় করতে পারেন।
কসমেটিক রিলেটেড বিষয়াদি রিভিউ করা
আমরা সকলেই সম্পর্কে জানি যে মেয়েরা কসমেটিক রিলেটেড বিষয়াদিতে খুবই বেশি দুর্বল।
এবার আপনি যদি এই কসমেটিক রিলেটেড কোন একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলেন, তাহলে কি রকমের উপকার হবে সেটা আর বলে বুঝাতে হবে না।
এতে নিত্যনতুন কসমেটিক রিলেটেড টিপস যদি তাদেরকে যথাযথভাবে দিতে পারেন, তাহলে আপনার চ্যানেল খুবই শিগ্রি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।
কিভাবে কি হয়
আপনার যদি টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা থেকে থাকে, তাহলে আপনি চাইলে এরকম ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে আপনি যেভাবে আপনার নলেজ কে সমৃদ্ধ করতে পারবেন, ঠিক একইভাবে অন্যকে সহায়তা করতে পারবেন।
টেকনোলজি সম্পর্কে আপনার যদি সেরকম কোনো ধারণা না থাকে, তাহলে আপনি চাইলে ইউটিউবে বিভিন্ন রকমের ভিডিও দেখার মাধ্যমে ধারণা অর্জন করে নিতে পারেন।
এবং তারপরে, এসমস্ত টেকনিক নিজের উপর যাচাই করে ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার চ্যানেলে আপলোড করতে পারেন।
ট্রেন্ডিং বিষয় নিয়ে আলোচনা করা
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ট্রেন্ডিং কোন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা যেতে পারে।
এসমস্ত ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পূর্বে আপনাকে নিজেকে যাচাই করে নিতে হবে। কারণ তুখোড় জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া এ সমস্ত ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা কষ্টসাধ্য।
ভ্রমণ ভিডিও করা
আপনি যদি ভ্রমণবিলাসী হয়ে থাকেন, তাহলে ভ্রমণ ভিডিও তৈরি করার দিকে নজর দিতে পারেন।
এতে করে ভ্রমণের বিভিন্ন বিষয়াদি আপনার অডিয়েন্সের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং খুব শীঘ্রই ইউটিউব চ্যানেল একটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারেন।
প্রমো ভিডিও তৈরি করা
বিভিন্ন রকমের প্রোডাক্ট এর ডিসকাউন্ট কোড নিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করলে ভালো হবে।
এক্ষেত্রে প্রোডাক্ট রিলেটেড ডিসকাউন্ট কোড গুগলে সার্চ করার মাধ্যমে কিংবা অন্য যে কোনো রকমের প্ল্যাটফর্মের সার্চ করার মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে।
প্রোমো কোড খুঁজে বের করে নিয়ে, এটি যাচাই করা হয়ে গেলে আপনি চাইলে এটি নিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং ইউটিউব এ আপলোড দিতে পারেন।
প্রোমো কোড রিলেটেড ওয়েবসাইট থেকে আয় করার ক্ষেত্রে আপনি দুই রকম ভাবে আয় করতে পারবেন। এর মধ্যে থেকে একটি হলো ভিডিও মনিটাইজ করা এবং অন্যটি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়।
এই দুইটি উপায়ে আপনি যদি আয় করেন, তাহলে খুব বেশি পরিমাণে ডলার আয় করা সম্ভব হবে।
লাইভ স্টিম করা
আপনি যদি লাইভ স্ট্রিমিং করতে পছন্দ করেন, তাহলে লাইভ স্ট্রিমিং চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। লাইভ স্ট্রিমিং রিলেটেড চ্যানেল তৈরি করার মাধ্যমে যেকোনো নিত্য নতুন জিনিস লাইভ করতে পারেন।
ভিডিও কনটেস্ট করা
এছাড়াও ভিডিও কনটেস্ট করতে আপনি যদি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাহলে ভিডিও কনটেস্টের দিকে নজর দিতে পারেন।
খেলার ভিডিও আপলোড করা
বর্তমান সময়ে যে সমস্ত খেলা রয়েছে, সে সমস্ত খেলার ভিডিও আপনি চাইলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে কপিরাইট মেটারিয়াল অবশ্যই মেনে চলবেন। অন্যথায়, আপনার চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যাবে।
আর উপরে উল্লেখিত আইডিয়া ছাড়াও আরও বিভিন্ন রকমের আইডি অনুসারে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।
আরো কিছু ভিডিও তৈরির আইডিয়া
এছাড়াও এসমস্ত আইডিয়া ছাড়াও আপনি যদি আরো বেশি আইডিয়া কালেক্ট করে নিতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
উপরে উল্লেখিত আর্টিকেল থেকে আপনি কয়েক শত ইউটিউব ভিডিও তৈরি করার আইডিয়া কালেক্ট করে নিতে পারবেন এবং এসমস্ত ভিডিও তৈরীর মাধ্যমে আপনার চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করব?
এখনই আপনি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন এবং এখান থেকে যেকোন একটি পছন্দের টপিক বেছে নিতে পারবেন, তখন আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
খুব সহজে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে চাইলে, নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
উল্লেখিত আর্টিকেল এর গাইডলাইন অনুযায়ী আপনি চাইলে খুব সহজেই একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে পারবেন এবং উপরে উল্লেখিত ভিডিও তৈরি আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নেয়ার পরে ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
তাহলে আর দেরি না করে এখুনি উপরে উল্লেখিত আইডিয়ার দিকে নজর দিন এবং একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার মাধ্যমে আয় করা শুরু করে দিন।