চুল সিল্কি করার উপায় – প্রাকৃতিকভাবে চুল সিল্কি করুন

চুল সিল্কি করার উপায় কি? সিল্কি চুল কার না পছন্দ? সবাই চায় তাদের চুল সিল্কি হোক এবং এর দ্বারা তাদেরকে আরও বেশি আকর্ষণীয় দেখাক।

তবে চাইলেই কি আপনার মন মত যে কোন কিছু হয়ে যায়? এক্ষেত্রে আপনাকে সেই জিনিসটি পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হয় এবং তারপরে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়।

এবার চলে আসুন চুল সিল্কি করার ব্যাপারে, আপনার যদি কালো এবং সিল্কি চুল পছন্দ হয়ে থাকে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে আপনি যদি এই অবস্থা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন, তাহলে কিভাবে চুল সিল্কি করবেন?

ঘরে বসে চুল সিল্কি করার উপায় সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলের বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। এর মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই আপনার চুলের সিলকি লুকিং দেখতে পারবেন।

ঘরে বসে চুল সিল্কি করা কি সম্ভব?

মোট কথা হল , আপনি যদি সঠিক পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে ঘরে বসে চুল সিল্কি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো রকমের ভুল পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আপনার চুল পড়ে মাথা টাক হয়ে যেতে পারে।

সেজন্য, অবশ্যই অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী চুল সিল্কি করার উপায় গুলো সংগ্রহ করতে হবে এবং তারপরে সে অনুযায়ী এগিয়ে যেতে হবে।

তবে এটা নিয়ে ঘাবড়ানোর কোনো দরকার নেই। কারণ, আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে চুল সিল্কি করার উপায় সম্পর্কে।

যাতে করে আপনি খুব সহজে ঘরে বসে চুল সিল্কি করতে পারবেন।

এছাড়াও এই উপায়গুলো ন্যাচারাল হওয়ার কারনে এতে কোন রকমের ঝুঁকি নেই এবং চুল পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ কোন কিছু না হারিয়ে আপনি পাবেন চুলের একটি অসাধারণ সিল্কি লুকিং।

তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে এবার জেনে নেয়া যাক চুল সিল্কি করার উপায় সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত।

তেলের ব্যবহার

চুল সিল্কি এবং ঘন কালো করার জন্য তেল একটি অন্যতম উপাদান। আপনি যদি সঠিক উপায়ে আপনার চুলের মধ্যে তেল ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে আপনার চুল অল্প কয়েকদিনের সিল্কি হয়ে উঠবে।

এক্ষেত্রে চুল সিল্কি করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিক পদক্ষেপ অনুসরণ করার মাধ্যমে চুলের তেল দিতে হবে এবং তাহলেই আপনি সঠিক রেজাল্ট পাবেন।

তেলের মাধ্যমে আপনি যদি এই কাজটি সম্পন্ন করতে চান, তাহলে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে মাথায় ভালোভাবে তেল মেখে নিতে হবে।

এভাবে আপনি তিন-চারদিন যখন ভালোভাবে মাথায় তেল মেখে ঘুমিয়ে যাবেন এবং তারপরে সকালে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করে নিবেন তখন আপনার চুল অটোমেটিকলি গ্লোয়িং ছড়াবে।

এবং এভাবে বেশকিছুদিন আপনি যদি এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন, তাহলে আপনি একটি অসাধারণ সিল্কি লুকিং চুল পাবেন।

ডিমের সাদা অংশ

চুলকে গ্লোয়িং এবং সাইনিং করার জন্য ডিমের সাদা অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।

এ ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ অনুযায়ী আপনি যদি চুলের মধ্যে ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে মেখে নিতে পারেন, তাহলে আপনার চুল পূর্বের চেয়ে আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

চুলের রুক্ষতা কাটাতে ১টি ডিমের সাদা অংশ, ৩ টেবিল চামচ জল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। যখনই প্যাকটি তৈরি করে নিবেন তখন এটি চুলে ব্যবহার করতে হবে।

প্যাকটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে ভালো করে শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পুর পর চুলে কন্ডিশনার লাগান।

যখনই আপনি চুলে শ্যাম্পু দেয়ার পরে কন্ডিশনার দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলবেন, তখন দেখবেন অন্যরকম আকর্ষণীয় দেখাচ্ছে।

চুল ট্রিম করা

এছাড়াও আপনি যদি চুল স্ট্রিম করে থাকেন, তাহলে আপনার চুল রুক্ষতা থেকে মুক্তি পাবে।

এক্ষেত্রে আপনি চাইলে প্রতি মাসে ২ বার চুল চুল স্ট্রিম করতে পারেন। যাতে করে আপনার চুল আরও বেশি পরিমাণে সিল্কি হয়ে উঠবে।

চুলে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার এর ব্যবহার

এছাড়াও আপনি যদি রেগুলারলি চুলে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার চুল খুবই দ্রুত সিল্কি হয়ে উঠবে।

এক্ষেত্রে প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করার পরে চুল ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে আপনি যদি কন্ডিশনার ব্যবহার করেন এবং তার পরে পুনরায় দুজনে তাহলে আপনার চুল সাথেসাথে সিল্কি হয়ে উঠবে।

যদিও এভাবে যখন আপনার চুল সিল্কি হয়ে উঠবে, তখন তার ঠিক কিছু সময় পরে আবার চুল তার নিজের অবস্থানে ফিরে যাবে।

তবে আপনি যদি এই কাজটি কয়েক সপ্তাহ যাবৎ অব্যাহত রাখেন, তাহলে আজীবনের জন্য একটি সিল্কি চুল উপহার হিসাবে পাবেন।

নারিকেল তেলের ব্যবহার

এছাড়াও চুলকে তার রুক্ষতা থেকে ফিরিয়ে আনতে নারিকেল তেলের কোন বিকল্প নেই।

আপনি যদি আপনার শরীরকে পরিপূর্ণভাবে সিল্কি দেখতে চান, তাহলে প্রতিদিন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পরে নারিকেল তেল ব্যবহার করুন।

নারিকেল তেল ব্যবহার করার পরে অটোমেটিকলি আপনি দেখতে পারবেন আপনার চুলটি আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে এবং আরো বেশি চমকাচ্ছে।

এছাড়াও প্রতিদিন নারিকেল তেল ব্যবহার করলে চুলের রুক্ষতা দূর হয়ে যাবে এবং আপনার চুল আকর্ষণীয় এবং সাইনিং হয়ে উঠবে।

জবা ফুলের পাপড়ি

এছাড়াও চুল সিল্কি করার জন্য অসাধারণ কাজের একটি জিনিস হল জবা ফুলের পাপড়ি। এটি আপনার চুল সিল্কি করার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।

তবে আপনাকে সঠিক উপায়ে জবা ফুলের পাপড়ি ব্যবহার করতে হবে, তাহলেই আপনি সঠিক উপকার পাবেন।

জবা ফুলের পাপড়ি চুলে ব্যবহার করার জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।

জবা ফুলের পাঁপড়ি জলে ভিজিয়ে রাখুন। পাঁপড়ি বেটে পেস্ট তৈরি করে নিন। গোটা চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।

যখনই আপনি একঘন্টা পরে ধুয়ে ফেলবেন এবং এর ধারাবাহিকতা কয়েকদিন বজায় রাখবেন, তখন আপনি আপনার চুলের দিকে তাকালে এর উপকারিতা লক্ষ্য করতে পারবেন।

মূলত ন্যাচারালি চুল সিল্কি করার জন্য জবা ফুলের পাপড়ি খুবই কাজে দেয়।

অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও পানি

চুল সিল্কি করার জন্য আরেকটি কাজের বস্তু হল অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও পানি।

অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও পানি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার চুল সিল্কি হয়ে উঠবে এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও পানি ১:১ অনুপাতে মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার হিসেবে এটা ব্যবহার করুন।

চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার হিসেবে যখনই আপনি অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও পানি ব্যবহার করবেন তখন আপনি একটি অন্যরকম আকর্ষণীয় চুলের রুপ দেখতে পারবেন।

চুল সিল্কি করার উপায় হিসেবে এটি খুব বেশি কাজে দিবে এবং এটি আপনার চুল সিল্কি করার উপায় অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে।

চুল সিল্কি করতে কেমিক্যাল ব্যবহার করা কি ঠিক হবে?

আপনি যদি খুব তাড়াতাড়ি রেজাল্ট নিয়ে নিতে চান, তাহলে চুল সিল্কি করার জন্য কেমিক্যাল ব্যবহার করতে পারেন। তবে কেমিকাল ব্যবহারে আপনার চুলের নানা রকম সাইডএফেক্ট দেখা দিবে।

চুল সিল্কি করার উপায় - প্রাকৃতিকভাবে চুল সিল্কি করুন

যেমন, যখনই আপনি চুলে কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন তখন দেখা যাবে কয়েক দিন পরে কিংবা কয়েক মাস পরে আপনার চুল পড়া শুরু হয়ে যাবে।

চুল পড়তে পড়তে কোন একসময় আপনার মাথা টাক হয়ে যেতে পারে। সেজন্য, আমার রিকমেন্ডেড হবে চুলে কোন রকমের কেমিক্যাল ব্যবহার না করা।

এছাড়াও আপনি যদি একান্ত প্রয়োজনে জন্য কেমিক্যাল ব্যবহার করতে ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে এর পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ স্পেশালিস্ট এর সাথে কথা বলে নেবেন।

বাজারে যে সমস্ত সহজলভ্য কেমিক্যাল পাওয়া যায় সেগুলো উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি সাধন করবে। তাই কেমিক্যাল ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই সতর্ক অবস্থানে থাকুন।

শেষ কথাঃ উপরে যে সমস্ত চুল সিল্কি করার উপায় আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো মূলত ন্যাচারালি ভাবে আপনার চুলকে সিল্কি করতে সহায়তা করবে।

তবে এটি পরিপূর্ণভাবে কাজ করতে কিছু সময়ের প্রয়োজন হবে।

কারণ, আপনি যদি একদিন এই সমস্ত উপায়ে ব্যবহার করেন এবং তার পরের দিন আপনি উপকার লক্ষ্য করতে চান, তাহলে কিন্তু সেটা হবে না।

এক্ষেত্রে আপনাকে কন্সিস্তেন্টলি এসমস্ত উপায় আপনার চুলে প্রয়োগ করতে হবে, তাহলে আপনি কোন একদিন অবশ্যই ফলাফল পাবেন।

চুল সিল্কি করার উপায় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top