চুল পড়া বন্ধ করার উপায় | কি কারণে চুল পড়ে জেনে নিন?

কোন কারণে যদি আপনার মাথার চুল পড়তে পড়তে একেবারে টাক হয়ে যায়, তাহলে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানা বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়ে।

কি কি কারণে আপনার মাথার চুল পড়া শুরু হতে পারে? এবং কি সমস্ত পদ্ধতি অনুসরণ করলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে, সেই সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।

চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে চাইলে এই আর্টিকেলটি শেষপর্যন্ত দেখে নিতে পারেন।

চুল পড়া বন্ধ করার উপায়

আপনার নিত্যদিনের কিছু অভ্যাসের কারণে আপনার চুল পড়া পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং পুনরায় আপনি স্বাভাবিক হতে পারেন।

কি সেই সমস্ত অভ্যাস? যে সমস্ত অভ্যাসের কারণে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি পুনরায় স্বাভাবিক হতে পারবেন? সেই সম্পর্কে নিচে আলোকপাত করা হলো।

ভিটামিন ই এর ব্যবহার

চুল পড়া বন্ধ করতে আপনি যদি চুলের গোড়ায় ভিটামিন-ই ব্যবহার করেন, তাহলে সেটি আপনার চুলের গোড়া আরও বেশি শক্ত করবে।

নিত্যদিন আপনি যদি ভিটামিন এ ব্যবহার করেন, তাহলে সেটি আপনার চুলের গোড়া শক্ত করে আপনার চুল পড়া রোধ করবে।

এছাড়াও, আপনি এটা জানলে অবাক হবেন যে ভিটামিন-ই মাথার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে আপনাকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক করে তুলে।

চুলে নিত্যদিন তেল ব্যবহার করা

একজন বিশেষজ্ঞ এরকম মত দিয়েছেন যে, নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহার কারনে চুল হবে মসৃণ এবং চুল পড়া রোধ হবে।

চুলে তেল ব্যবহার করলে চুল আগের তুলনায় বেশি শক্ত করা হয়ে উঠে এবং চুল পড়া রোধ হয়। তবে, আপনি যদি চুল বেশি মসৃণ করতে চান, তাহলে চুলে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।

সর্বাধিক ফলাফল পাওয়ার জন্য আপনি চাইলে রোজমেরি ল্যাভেন্ডার তেলের ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যাতে করে, আপনার চুল পড়া পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি রোধ হবে।

খাদ্যভাসে পরিবর্তন লক্ষণীয়

অনেকসময় যদি আপনার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন হয় এবং আপনার প্রোটিনের ঘাটতি হয়, তাহলে চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে।

এজন্য , প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখবেন। যাতে করে, আপনার শরীরের খাবারের ঘাটতি পূরণ হবে এবং আপনার চুল আরও বেশী মজবুত হবে।

কেমিক্যাল শ্যাম্পু পরিহার করা

এরকম অনেক কেমিক্যাল শ্যাম্পু রয়েছে, যে সমস্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে।

সেজন্য কেমিক্যাল শ্যাম্পু পুরোপুরি পরিহার করুন।

তবে, আপনি যদি আপনার চুল আরও বেশি মোটা এবং শক্ত রাখতে চান, তাহলে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। নিয়মিত কন্ডিশনার ব্যবহারে চুল হয়ে উঠবে সতেজ এবং চুল পড়া রোধ হবে।

মাথায় গরম পানি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা

আপনি যদি মাথায় প্রতিদিন গরম পানি ঢালতে থাকেন, তাহলে সেটি আপনার মাথার তালুতে যেরকম সমস্যা সৃষ্টি করবে, একই রকম ভাবে আপনার চুল পড়া সৃষ্টি করবে।

সেজন্য, পূর্বে থেকে যদি মাথায় গরম পানি ঢালা অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে সেটি প্রত্যাহার করুন এবং প্রয়োজনে আপনি চাইলে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন।

জেনে নিন: মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি? (পরীক্ষিত ১২ টি উপায়)

হালকা কুসুম গরম পানিতে আপনার মাথার চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হবেনা বরং আপনার চুল সতেজ থাকবে।

গরম বাতাস দেয়া থেকে বিরত থাকুন

চুলে কোন রকমের গরম বাতাস দিবেন না। কারণ, আপনি যদি খুলে গরম বাতাস দিয়ে চুল ঠিক রাখার চেষ্টা করেন, তাহলে সেটি আপনার চুলের ক্ষতি সাধন করেন।

প্রতিদিন পরিমাণমতো পানি পান করুন

আপনার শরীরে যদি পানি স্বল্পতা দেখা দেয় তাহলে চুলপড়া রিলেটেড সমস্যা হয়। সেজন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন।

ধুমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে সেটি ত্যাগ করুন

আপনার যদি ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস থেকে থাকে, তাহলে সেটি এখনই ত্যাগ করে নিন।

কারণ অনেক বিশেষজ্ঞ এই সম্পর্কে একমত পোষণ করেছেন যে, আপনার এই সমস্ত অভ্যাস চুল পড়া আরো বেশি বাড়িয়ে তোলে এবং এগুলোর কারণে আপনার চুল পড়তে পারে।

সেজন্য, আপনি যদি চুল পড়া বন্ধ করতে চান, তাহলে আজকেই এর সমস্ত ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করুন।

চুল পড়া রোধে আরো কিছু ঘরোয়া উপায়

এছাড়াও আপনি চাইলে আরো কিছু ঘরোয়া উপায়ে ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার চুল পড়া রোধ করতে
পারবেন।

কি সেই সমস্ত উপায় যে সমস্ত উপায়ে ব্যবহার করার মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ করতে পারবেন। বা এগুলো চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে ব্যবহার করা হয়?

চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে খ্যাত যে সমস্ত ঘরোয়া উপায় রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোকপাত করা হলো।

পেঁয়াজের রস

চুল পড়া বন্ধে একটি প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্ট হলো পেঁয়াজের রস। আপনি চাইলে পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে পারেন, এতে করে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

আমলকি

চুলের গোড়ায় আমলকীর তেল ঘষে আধঘন্টা ধরে ব্যবহার করুন এবং তারপরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

এটি আপনার চুল পড়া রোধ করবে এবং স্ট্রং করে তুলবে।

মেথি

এছাড়াও চুল পড়া রোধ করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হলো মেথির ব্যবহার।

আধা কাপ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে বেটে চুলে লাগান। ১ ঘণ্টা পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

ডিমের কুসুমের ব্যবহার

ভালো করে একটি ডিম ফাটিয়ে নিয়ে তারপরে আপনার চুলের গোড়ায় সেটি ব্যবহার করুন এবং ৩০ মিনিট ধরে এভাবেই রেখে দিন।

ভালোভাবে লাগানোর পরে ৩০ মিনিট যখন অতিক্রম হয়ে যাবে, তখন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে এটি অনেক ভালো কাজে দেয়।

উপরে যে সমস্ত উপায়ের কথা মেনশন করা হয়েছে, সে সমস্ত উপায়ে আপনার চুল পড়া রোধ করতে পারবেন।

চুল পড়ার কারন কি?

আপনার বিভিন্ন রকমের এ্যাকটিভিটির কারণে আপনার মাথার চুল পড়ে যেতে পারে এবং সাইন্টিস্ট এই সমস্ত একটিভিটি গুলোকে একটি লিস্টে তুলে ধরেছেন।

আপনার মত যদি এই সমস্ত অভ্যাস থেকে থাকে কিংবা আপনার মধ্যে যদি এসমস্ত পরিবর্তন চলে আসে, তাহলে আপনারও চুলপড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে।

আপনার অনিয়ন্ত্রিত ডায়েট

আপনার শরীর যদি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে ব্যর্থ হয়, তাহলে আপনার চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে।

সেজন্য, যখনই চুলপড়া রিলেটেড সমস্যা হবে কিংবা চুলপড়া রিলেটেড সমস্যা হওয়ার পূর্বেই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন।

আপনার নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ওমেগা ৩, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ খাবারসমূহ যুক্ত করতে পারেন যাতে করে আপনার চুল আরও বেশি ষ্ট্রং হবে এবং চুল পড়া রোধ হবে।

ইউভি রশ্মি

চুলপড়ার একটি মারাত্মক কারণ হলো ইউভি রশ্মি অর্থাৎ আপনি যদি বেশি সময় সূর্যলোকে অবস্থান করেন, তাহলে আপনার চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে।

অপ্রয়োজনীয় পন্য ব্যবহার করা

অনেকেই চুলের গোড়া শক্ত করার জন্য বিভিন্ন রকমের ঔষধ কিংবা আরো বিভিন্ন রকমের ও প্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবহার করে থাকেন।

আপনারা যদি এই সমস্ত বিষয়াদি ব্যবহার করা অভ্যাস থেকে থাকে, তাহলে সেটি বন্ধ করে দিন। প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখে নিন।

মাত্রাতিরিক্ত ঔষধ সেবন করা

এরকম অনেক রকমের ঔষধ রয়েছে, যে সমস্ত ঔষধ আপনি যদি বেশি পরিমাণে সেবন করেন, তাহলে আপনার চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে।

তাছাড়াও আপনি যদি চুলের মাত্রাতিরিক্ত হিট দেন কিংবা বিভিন্ন রকমের ঔষধ দিয়ে থাকেন, তাহলেও আপনার চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে।

ভেজা চুল আঁচড়ানো

অনেকে গোসল করার পরেই চুলগুলো না শুকিয়ে ভেজা চুলে চুল আঁচড়াতে থাকেন। আপনার যদি এই সমস্ত অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে সেটি পরিহার করুন।

কারণ ভেজা চুলে চুলে আচড়ালে, চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশী গুণে বেড়ে যায়।

অতিরিক্ত টাইট করে বাধা

এছাড়াও আপনি যদি অতিরিক্ত টাইট করে চুল বাধেন, তাহলে আপনার চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে। সেজন্য, অতিরিক্ত টাইট করে চুল বাধা থেকে বিরত থাকুন।

চুল পড়া বন্ধ করার উপায় কি? এবং কি কি কারণে আপনার চুল পড়া রিলেটেড সমস্যা হতে পারে? সে সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top