মোটা হতে কে না চায়? তবে আমাদের এই চাওয়াটা অপূর্ণ থেকে যায়, মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনি যদি জেনে নিতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য এক অনন্য গাইড হতে চলেছে।
এ আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে, মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে এবং যে সমস্ত পদক্ষেপ অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি চাইলে মোটা হতে পারবেন, সেই সম্পর্কে।
পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
মোটা না হওয়ার কারণ কি?
সর্বপ্রথমেই সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক যে আপনি কেন মোটা হচ্ছেন না? বা যে কেউ কেন তাদের প্রয়োজন অনুসারে ওজন বাড়িয়ে নিতে পারে না?
অনিয়ন্ত্রিত ওজন কমার কারণ কিংবা আপনার ওজন না বাড়ার কারণ অনেকগুলো রয়েছে।
অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ওজন কমে যাওয়া কিংবা আপনার ওজন প্রয়োজন অনুসারে না বেড়ে উল্টা আরো কমে যাওয়ার যে সমস্ত কারণ রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।
- অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস
- জেনেটিক কারণ
- মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা
- ডায়রিয়া
- ক্যান্সার
- ডায়বেটিস
- এইডস
- হাইপারথাইরয়েডিজম
- আর্থ্রাইটিস
- যক্ষ্মা
- কিডনির সমস্যা
- ফুসফুসের সমস্যা
- ড্রাগ নেওয়া ইত্যাদি।
উপরে যে সমস্ত বিষয়গুলি মেনশন করা হয়েছে, সেই সমস্ত কারণগুলোর জন্য আপনার ওজন কমে যেতে পারে।
অথবা আপনি যখন ওজন বাড়াতে চাইবেন, তখন সেটি এফেক্টিভ নাও হতে পারে।
সুতরাং, আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান, তাহলে একজন শারীরিক চিকিৎসক প্রথমে দেখিয়ে নিন এবং নিশ্চিত হয়ে যান, উপরে উল্লিখিত অসুখের মধ্যে থেকে কোন একটি আপনার শরীরের হয়েছে কিনা।
যদি আপনি এটি নিশ্চিত হয়ে যান যে উপরে উল্লেখিত কোন সমস্যা আপনার মধ্যে নেই, তাহলে এবার জেনে নেয়া যাক, কিভাবে আপনি নিজেই কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করে ওজন বাড়াতে পারবেন।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি ?
প্রথমেই সম্পর্কে আলোকপাত করা দরকার, আপনি চাইলেই কি কি রকমের কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে মোটা হতে পারবেন।
অর্থাৎ এরকম কিছু রুটিন রয়েছে, যে সমস্ত রুটিনমাফিক আপনি যদি বেশ কিছুদিন নিজেকে সাজিয়ে রাখতে পারেন, তাহলে কিছুদিনের মধ্যে আপনি ফলাফল লক্ষ্য করবেন।
এক নজরে জেনে নেয়া যাক কি সেই সমস্ত উপায়? যে সমস্ত উপায়ে আপনি চাইলে মোটা হতে পারে।
- খেজুরের সাথে শসা মিক্স ( সর্বাধিক কার্যকরী)
- পরিমিত পরিমাণে ব্যায়াম করা।
- নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
- পরিমিত পরিমাণে ঘুমান।
- উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া।
- সকালে কিসমিস এবং রাতে খেজুর খাওয়া।
- এসমস্ত খাবারে ওজন কমিয়ে সেগুলো থেকে বিরত থাকা।
- সর্বদা চাপ মুক্ত থাকা।
- হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলে সেটি পরিহার করা ইত্যাদি।
উপরে যে পরীক্ষিত উপায় বর্ণনা করা হয়েছে, সেই পরীক্ষিত উপায় অনুযায়ী আপনি যদি জীবন যাপন করতে পারেন, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনি ফলাফল লক্ষ্য করবেন।
এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
খেজুরের সাথে শসা মিক্স করে খাওয়া
আপনার প্রশ্ন যদি থাকে মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি? তাহলে সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকরী উত্তর হলো, আপনি চাইলে খেজুরের সাথে শসা মিক্স করে খেতে পারেন।
কারণ, এটি সবচেয়ে বেশি কাজে দিবে, যদি আপনি মোটা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।
এটি যে কতটা কার্যকরী পদ্ধতি, সম্পর্কে আপনি যদি জেনে নিতে চান তাহলে নিম্নলিখিত হাদীসটির দিকে লক্ষ্য করুন।
আয়িশাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন,আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে রাসূলুল্লাহ(সাঃ)-এর নিকট পাঠাবেন। এজন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন,কিন্তু কোন ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সাথে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই। (সুনানে আবু দাউদ) হাদিস নং ৩৯০৩ হাদিসের মান: সহিহ)
উপরে উল্লেখিত হাদীস থেকে আপনি হয়তো এ সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন যে, এটি আসলে কতটা কার্যকরী।
এজন্য আপনি যদি মোটা হতে চান, তাহলে সর্বপ্রথম এই কাজটি করার চেষ্টা করুন।
পরিমিত পরিমাণে ব্যায়াম করা
মোটা হওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রেখেছে শারীরিক ব্যায়াম।
শুধু মোটা হওয়ার জন্য না, যে কোন রকমের এর শারীরিক ক্ষতি পূরণ করার জন্য ব্যায়াম আপনার জন্য এক অনন্য সহযোগী।
মোটা হওয়ার জন্য যে সমস্ত ব্যায়াম রয়েছে সে সমস্ত ব্যায়াম যদি আপনি করেন কিংবা অন্য আরো যে সমস্ত ব্যায়াম রয়েছে, সেগুলো যদি আপনি প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ করেন, তাহলে আপনার শরীরের ঘাটতি পূরণ হবে।
এছাড়াও ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার শরীরের যে কসরত হবে, সেটির মাধ্যমে আপনার খাবারের উদ্রেক হবে।
এছাড়াও পেশি মোটা করা কিংবা আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মোটা করার মতো বিভিন্ন রকমের বিদ্যমান রয়েছে। সেই সমস্ত ব্যায়াম করতে পারেন।
নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
মোটা হওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। সেজন্য, আপনি যদি মোটা হতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
আপনি চাইলে শর্করার কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে পেষণ করতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের শারীরিক ঘাটতি পূরণ হবে এবং আপনি অচিরেই মোটা হয়ে যাবেন।
পরিমিত পরিমাণে ঘুমান
আপনি যদি অপরিমিতভাবে ঘুমান অর্থাৎ কোন দিন খুব বেশি পরিমাণে ঘুমান এবং কোন দিন খুব কম পরিমাণে ঘুমান, তাহলে সেটি আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
সেজন্য আপনার বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুমান। হতে পারে সেটি ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা।
তবে সর্বোপরি চেষ্টা করবেন সকাল সকাল ঘুমিয়ে যাওয়া এবং ভোরে ঘুম থেকে উঠার। রাত ২ টার সময় ঘুমিয়ে সকাল ১০ টার সময় ওঠার অভ্যাস থাকলে সেটি পরিহার করুন।
কারণ, এই সমস্ত অপরিমিত ঘুমের অভ্যাস আপনার শরীরের ঘাটতি পূরণ করার বদৌলতে আপনার শরীরের ক্ষতি করবে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া
উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত যে সমস্ত খাবার রয়েছে, সে সমস্ত খাবারগুলো খাওয়ার সর্বোপরি চেষ্টা করবেন। কারণ, আপনার শরীরে যদি ক্যালরির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে আপনার শরীরে শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
এবং যখনই আপনার শরীরে শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, তখন আপনার শরিরে অটোমেটিকলি মোটা হতে শুরু করবে।
এক্ষেত্রে সর্বোপরি চেষ্টা করবেন উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার জন্য। যে সমস্ত খাবারে উচ্চ ক্যালরি রয়েছে, সে সমস্ত খাবারের একটি ছোট লিস্ট নিচে তুলে ধরা হলো।
- চিনাবাদামের মাখন।
- চিয়া বীজ।
- কুইনোয়া বা কাওন চাল।
- অলিভ ওয়েল।
- তিন বাদামের মিশ্রণ।
এছাড়াও আরো যে সমস্ত খাবারে উচ্চ ক্যালোরি বিদ্যমান রয়েছে সে সমস্ত খাবার গুলো হলঃ কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তাবাদাম, চিনাবাদাম, খেজুর, কিসমিস।
আলুবোখারা, ননিযুক্ত দুধ, ফুলক্রিম দই, পনির, ক্রিম, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস, ছাগলের মাংস ও কলিজা, আলু, মিষ্টি আলু, চকলেট, কলা, আ্যভোকাডো, পিনাট, মাখন ইত্যাদি।
উপরে যে সমস্ত খাবারের কথা মেনশন করা হয়েছে, সে সমস্ত খাবারগুলো উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার। এই সমস্ত খাবার পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে আপনার ওজন অচিরেই বেড়ে যাবে।
সকালে কিসমিস এবং রাতে খেজুর খাওয়া
এছাড়াও, মোটা হওয়ার সহজ উপায় গুলো মধ্যে থেকে আরেকটি উপায় হলো সকালে কিসমিস এবং রাতে খেজুর খাওয়া।
আপনি যদি সকালে কিসমিস এবং রাতে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে মোটা হওয়ার চান্স আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।
যেসমস্ত খাবারে ওজন কমিয়ে সেগুলো থেকে বিরত থাকা
এরকম বিভিন্ন রকমের খাবার রয়েছে, যে সমস্ত খাবার বেশি পরিমানে খেলে আপনার ওজন বাড়ার বদৌলতে উল্টো কমে যাবে।
যে সমস্ত খাবার আপনার ওজন কমিয়ে দিবে সে সমস্ত খাবার গুলো হলোঃ অতিরিক্ত পরিমাণে পানি পান করা, মাত্রাতিরিক্ত আপেল গ্রহন করা, ভেজানো বাদাম ইত্যাদি।
এসমস্ত খাবার গুলো আপনার শরীরের মেদ কমিয়ে দিবে এবং শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করবে। এজন্য এ সমস্ত খাবার খাওয়ার খুব বেশি পরিমাণে অভ্যাস থাকলে সেটি কমিয়ে আনুন।
সমীকরণটা সহজভাবে বলতে গেলে এটা বলতে হবে, এ সমস্ত খাবার খাওয়ার পূর্বে থেকে যদি আপনার ১০০% অভ্যাস থাকে, তাহলে সেটি কমিয়ে ৭০ বারে নিয়ে আসুন। বা আরেকটু বাড়াতে পারেন।
সর্বদা চাপ মুক্ত থাকা
আপনি যদি সর্বদা চাপমুক্ত থাকতে পারেন, তাহলে সেটি আপনার শরীরের উন্নতি সাধন করে। মানসিক চাপ গ্রস্থ থাকলে শরীরে অবনতি হয়।
সেজন্য সর্বাপেক্ষা চেষ্টা করবেন, চাপ মুক্ত থাকার। যে কোন কাজ সহজ ভাবে সহজ উপায়ে সম্পন্ন করার উপায় খুঁজে বের করার।
হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলে সেটি পরিহার করা
শরীরের ক্ষতি সাধন করার একটি মারাত্মক কারণ হলো হস্তমৈথুন করা। আপনার যদি এই হারাম কাজটি করার অভ্যাস থেকে থাকে, তাহলে এই কাজটি অবশ্যই পরিহার করুন।
কারণ, এই কাজটি শুধুমাত্র আপনার দুনিয়া নয় এটি আপনার আখিরাত ও ধ্বংস করবে।
কাজেই, আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান এবং দুনিয়া আখেরাতে সফলকাম হতে চান, তাহলে এই বাজে অভ্যাস ত্যাগ করুন।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি এবং কিভাবে আপনি চাইলে খুব সহজে মোটা হতে পারবেন? সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে উপরে আলোচনা করা হলো।
Also Read: ফেসবুকে স্টাইলিশ নাম দিয়ে তৈরী করুন একাউন্ট