পোস্টের ভিতরে যা থাকছে
পবিত্র কুরআনে নামায সম্পর্কে বর্ননাঃ
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে নামাযের ব্যাপারে খুবই গুরুত্বারোপ করেছেন এবং নামায ও নামাযীকে সম্মানিত করেছেন।
কুরআনের অনেক জায়গায় বিভিন্ন ইবাদতের সাথে বিশেষভাবে নামাযের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন:
“নিশ্চয় নামায মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।” “তোমরা সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে (মাধ্যম) আসরের নামায।
আর আল্লাহর সমীপে কাকুতি-মিনতির সাথে দাঁড়াও”। (বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে উদ্দেশ করে বলা হয়)“আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে নামাজ কায়েম করতে বলুন।”
আল্লাহ তা’আলা আরো এরশাদ করেন:
“তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত প্রদান করো, এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।” ‘ওহে যারা ঈমান এনেছ, তোমরা রুকু করো, সিজদা করো ও তোমাদের রবের ইবাদত করো এবং সৎ কাজ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।‘আর আপনার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন এবং আপনি নিজেও এতে অবিচলিত থাকুন।
সফলতা ও সম্মানিত স্থান জান্নাতে প্রবেশকে আল্লাহ তা’আলা নামাজের উপরই স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন: – মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সাথে দণ্ডায়মান হয়।
‘সফলকাম ব্যক্তি সে-ই যে পবিত্রতা অর্জন করেছে। আপন প্রতিপালকের নাম স্মরণ করেছে এবং নামাজ আদায় করেছে।’
অতঃপর বলেন: “আর যারা তাদের সালাতে যত্নবান, তারাই জান্নাতের ওয়ারিশ-যারা ফিরদাউসের ওয়ারিশ হবে এবং তথায় তারা চিরকাল থাকবে।
নামায পরিত্যাগকারীর জন্য আল্লাহর আযাব অপরিহার্য। ইরশাদ হয়েছে: “অতঃপর তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা নামাজ বিনষ্ট করল এবং কুপ্রত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা শীগ্রই জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে”।
দোজখের কঠিন শাস্তিতে নিক্ষিপ্তদের সম্পর্কে বলা হয়েছে “কী অপরাধ তোমাদের দোজখে টেনে আনা হলো? তারা উত্তরে বলবে, আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না তথা নামাজ আদায় করতাম না।”
হাদীসে নামাজ
আল্লাহর একাত্ববাদ ও হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রেসালতের স্বাক্ষ্য দেয়ার পর নামাজ হল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানের পরেই নামাজের কথা উল্লেখ করে বলেন -ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি: ১. এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. জাকাত প্রদান করা। ৪. রমজানের রোজা রাখা। ৫. বাইতুল্লাহর হজ্ব করা।
তিনি আরো বলেন -সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি নামাজ, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ।
নামাজ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- তোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল নামাজ, একজন মুমিন অবশ্যই সর্বদা অজুর সংরক্ষণ করতে থাকে।
নামাজ নূর
যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ পাল্লাকে সম্পূর্ণ করে, সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে। নামাজ নূর-আলো। দান খয়রাত প্রমাণ স্বরূপ। ধৈর্য উজ্জলতা আর কোরআন তোমার পক্ষে প্রমাণ অথবা তোমার বিপক্ষে প্রমাণ।
নামাজ আল্লাহর নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের উপকরণ। সাওবান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহর জন্য সেজদা-নামাজ আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাফ করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – কে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর নিকট কোন আমল সবচেয়ে বেশি প্রিয় ? তিনি বলেন-সময় মত নামাজ আদায় করা, আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি? উত্তরে তিনি বলেন- মাতা পিতার সাথে সদাচরন করা। আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনটি ? উত্তরে বললেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা।
এই নামাজ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন — সালাতেই আমার চোখ জুড়ানো ও শীতলতা নিহিত।
এবং বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন: তুমি নামাজের ব্যবস্থা কর এবং তার মাধ্যমে আমাকে তৃপ্ত কর।
নামাজের মাধ্যমে ছগীরা তথা ছোট ছোট গুনাহগুলো হতে পরিত্রাণ লাভ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ হয়।
হাদীসে এসেছে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যদি তোমাদের কারো (বাড়ীর) দরজার সামনে প্রবাহমান নদী থাকে এবং তাতে প্রত্যেক দিন পাঁচ বার গোসল করে, তাহলে কি তার (শরীরে) ময়লা বাকী থাকবে? (সাহাবীগণ) বললেন, ‘না’।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অনুরূপভাবে আল্লাহ তা’আলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের দ্বারা (বান্দার) গুনাহকে মিটিয়ে দেন’।
তিনি আরো একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে বলেন, মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন এই বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন — যে কোন মুসলমানের জন্য যখন ফরজ নামাজের সময় উপস্থিত হয়, অতঃপর সে সুন্দরভাবে অজু করে এবং সুন্দরভাবে রুকু সেজদা করে, এতে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যদি সে কোন কবিরা গুনাহ না করে, আর এভাবে সর্বদা চলতে থাকে।[৩১]
শবে ক্বদরের নামাজের নিয়তঃ
নফল নামাজের নিয়ত
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ لَيْلَةِ الْقَدْرِِ النَّفْلِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
বাংলা-উচ্চারন
নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল লাইলাতিল ক্বদরি নফলে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা অর্থ
আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত লাইলাতুল ক্বদরের নফল নামাজ আদায় করছি।আল্লাহু আকবার।